National Herald Case

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা: সনিয়া-রাহুলের বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন, হস্তক্ষেপ করল না আদালত

আদালত জানিয়েছে, অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত যথাযথ এফআইআর নথিভুক্ত না-হলে অর্থ পাচারের তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট মামলা বৈধ হিসাবে বিবেচিত হবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:২৬
Delhi court refuses to take note of ED\\\\\\\\\\\\\\\'s money laundering case against Sonia Gandhi and Rahul Gandhi

(বাঁ দিকে) সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় আদালতে সাময়িক স্বস্তি পেলেন সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি ইডির চার্জশিটে এখনই হস্তক্ষেপ করল না। আদালত জানিয়েছে, তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-র অধীনে দায়ের করা অভিযোগে ত্রুটি রয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার দিল্লির আদালতের বিশেষ বিচারক বিশাল গোনগে জানান, ইডির আবেদন ব্যক্তিগত অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে। কোনও এফআইআরের ভিত্তিতে নয়। শুধু সনিয়া এবং রাহুল নন, এই মামলায় আরও কয়েক জনকে স্বস্তি দিয়েছে আদালত। তাঁরা হলেন কংগ্রেস নেতা সুমন দুবে, স্যাম পিত্রোদা। সেই সঙ্গে কিছু সংস্থা, সংগঠন রয়েছে। যেমন ইয়ং ইন্ডিয়ান, ডটেক্স মার্চেন্ডাইস লিমিটেড, ডটেক্সের প্রোমোটার সুনীল ভাণ্ডারি।

গত মাসেই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় এই সকলের বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করেছিল দিল্লি পুলিশ। সেই কথা উল্লেখ করেছে আদালত। এ-ও জানিয়েছে, অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত যথাযথ এফআইআর নথিভুক্ত না-হলে অর্থ পাচারের তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট মামলা বৈধ হিসাবে বিবেচিত হবে না। আদালত স্মরণ করেছে, পিএমএলএ-র বিধান অনুযায়ী, তদন্ত শুরুর আগে ইডি-কে একটি এফআইআর দায়ের করতে হবে। কিন্তু তা এখনও করা হয়নি তদন্তকারী সংস্থার তরফে। শুধু তা-ই নয়, এই মামলায় সিবিআই-ও এখনও পর্যন্ত কোনও এফআইআর দায়ের করেনি। ইডি এফআইআর দায়ের না-করেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, যা আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ! আদালত জানিয়েছে, এই পর্যায়ে আদালত অভিযোগ সত্য না অসত্য, সে সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করছে না। আইনি প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে।

আদালতের নির্দেশে জয় দেখছে কংগ্রেস। তারা জানিয়েছে, কংগ্রেস এবং দলীয় নেতৃত্ব সব সময়ই সত্যের জন্য লড়াই করছে। এই মামলা সনিয়াদের হয়ে আদালতে লড়েছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনুসিঙভি। তিনি জানিয়েছেন, এটা অদ্ভূত মামলা ছিল। এখানে কোথাও কোনও অর্থের পাচার হয়নি। তার পরেও ইডি বেআইনি আর্থিক লেনদেনের কথা বলছে।

জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে ২০১৩ সালে, মনমোহন সিংহের জমানাতেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। যার মূল হোতা ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর অভিযোগ, ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’ নামে যে সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশির ভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া।

কংগ্রেসের তরফে ঋণ মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বামী আদালতে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাদের কোনও কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকে ঋণ দেওয়াও তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। এই মালিকানা হস্তান্তরে বেআইনি লেনদেন হয়েছিল কি না, তার তদন্তের জন্য ২০১৫-র গোড়ায় ইডিকে নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির মেট্রোপলিটন আদালত। পাশাপাশি আইটিও-র দফতর থেকে কোনও পত্রিকা প্রকাশিত হয় না, এই যুক্তি দিয়ে এজেএল-কে দফতর খালি করতে বলেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। হাই কোর্টও ২০২২ সালে সেই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিল। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, ইয়ং ইন্ডিয়া অলাভজনক সংস্থা। এই সংস্থা কোনও মালিককে ডিভিডেন্ড (মুনাফার ভাগ) দিতে পারে না। কোনও সম্পত্তির হাতবদল বা আর্থিক লেনদেনও হয়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন