Delhi Air Pollution

দূষণের জেরে দিল্লিতে ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ! দাবি চিকিৎসকদের, জারি হল জিআরএপি-৪

চিকিৎসকদের কথায়, পিএম ২.৫, পিএম ১০, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ওজ়োন, সালফার ডাই অক্সাইড, যানবাহনের ধোঁয়া, কলকারখানার বর্জ্য প্রভৃতি বায়ুদূষক ফুসফুস মারফত দ্রুত রক্তে মিশে যায়। এর ফলে শরীরে প্রদাহ দেখা দেয়। সঙ্গে স্বাস্থ্যের উপর নানা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবও পড়ে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২০:০৪
দিল্লির দূষণের চিত্র।

দিল্লির দূষণের চিত্র। — প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বিষ-বাতাসে ধুঁকছে দিল্লি! দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। শনিবারও শহরের বাতাসের গড় গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ। পরিস্থিতি এমনই যে, উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরাও।

Advertisement

সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিল্লির হাসপাতালগুলিতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের সংখ্যা এক লাফে আগের থেকে ২০-৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। রোগীদের মধ্যে বয়স্কদের পাশাপাশি রয়েছেন তরুণ এবং শিশুরাও। চিকিৎসকদের কথায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং জরুরি বিভাগে এ ধরনের রোগীদের ভিড় লেগেই রয়েছে। রোজই কেউ না কেউ শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, বুকে টান ধরা এবং কাশির মতো উপসর্গ নিয়ে আসছেন।

ওখলার এক হাসপাতালের চিকিৎসক অভি কুমার পিটিআই-কে বলেন, ‘‘সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানির রোগীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বে়ড়ে গিয়েছে। এর জন্য সরাসরি বায়ুদূষণকে দায়ী করা যেতে পারে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, আগেও এমন উপসর্গ নিয়ে অনেকে আসতেন। তবে এখনকার উপসর্গগুলি আগের চেয়ে অনেক বেশি তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী। অভি আরও বলেন, ‘‘অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, নিয়মিত চিকিৎসার পরেও তাঁরা পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছেন না। উচ্চমাত্রার স্টেরয়েড এবং দীর্ঘ চিকিৎসার প্রয়োজন হচ্ছে। আর একটি উদ্বেগের বিষয় হল, আগে কখনও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল না এমন রোগীরাও আসছেন। বাইরে খেলাধুলো করার কারণে আক্রান্ত হচ্ছে কিশোর ও তরুণেরাও।’’

চিকিৎসকদের কথায়, পিএম ২.৫, পিএম ১০, নাইট্রোজেন অক্সাইড, ওজ়োন, সালফার ডাই অক্সাইড, যানবাহনের ধোঁয়া, কলকারখানার বর্জ্য প্রভৃতি বায়ুদূষক ফুসফুস মারফত দ্রুত রক্তে মিশে যায়। এর ফলে শরীরে প্রদাহ দেখা দেয়। সঙ্গে স্বাস্থ্যের উপর নানা দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবও পড়ে। দূষিত বাতাসে বেশিক্ষণ থাকলে শ্বাসনালির প্রদাহ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া এবং রক্তে শর্করার মাত্রার ওঠানামার মতো বিবিধ উপসর্গ দেখা দেয়। আর এক পালমোনোলজিস্ট অনিল গোয়েল পিটিআই-কে বলেন, ‘‘ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। সকালে হাঁটতে বেরিয়ে কিংবা বাইরে শরীরচর্চার পরেও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে।’’

প্রসঙ্গত, শনিবারও দিল্লির কোথাও কোথাও ৪০০ ছাড়িয়েছে বাতাসের গুণমান। ওয়াজ়িরপুরে ৪৪৩, জাহাঙ্গিরপুরীতে ৪৩৯, বিবেক বিহারে ৪৩৭, আনন্দ বিহারে ৪৩৫ এবং বুরারিতে ৪১৫ একিউআই রেকর্ড হয়েছে। সেই আবহে আরও কড়াকড়ি জারি করেছে প্রশাসন। শহর জুড়ে চতুর্থ তথা সর্বোচ্চ স্তরের ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (জিআরএপি-৪) চালু হয়েছে। জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হবে। স্কুলগুলির জন্যও নানা বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণত, একিউআই ২০১ থেকে ৩০০-র মধ্যে থাকলে জিআরএপি-১ বিধিনিষেধ কার্যকর হয়। জিআরএপি-২ কার্যকর হয় একিউআই ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে থাকলে। একিউআই ৪০১ থেকে ৪৫০-র মধ্যে হলে কার্যকর হয় জিআরএপি-৩। আর একিউআই ৪৫১ অতিক্রম করলে কার্যকর হয় জিআরএপি-৪।

Advertisement
আরও পড়ুন