National Herald Case

হেরাল্ড মামলা: ইডির আর্জির প্রেক্ষিতে সনিয়া-রাহুলদের জবাব তলব করল দিল্লি হাই কোর্ট, শুনানি তিন মাস পর

গত ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির চার্জশিটে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আদালত জানিয়েছিল, এই মামালায় তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর অধীনে দায়ের করা অভিযোগে ত্রুটি রয়েছে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৩৬
Delhi High Court seeks Sonia Gandhi, Rahul Gandhi and others reply on ED plea against trial court order in National Herald case

(বাঁ দিকে) সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির আবেদনে কংগ্রেসনেত্রী সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং অন্যদের জবাব তলব করল দিল্লি হাই কোর্ট। আগামী বছর ১২ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তার মধ্যে সনিয়াদের বক্তব্য জানাতে হবে আদালতকে।

Advertisement

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়াদের বিরুদ্ধে ইডির চার্জশিট গ্রহণ করেনি দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। কেন ওই চার্জশিট গ্রহণ করা যাবে না, তার যুক্তিও দেন বিচারক। নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তাদের দাবি ছিল, রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট চার্জশিট গ্রহণ না করে ঠিক করেনি। মামলাটিকে কেবল একটি ব্যক্তিগত অভিযোগ হিসাবে বিবেচনা করা ঠিক হবে না। ইডির আরও দাবি, অভিযুক্তদের অব্যাহতি দেওয়ার সময় আদালত গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিকগুলি উপেক্ষা করেছে। তাই নিম্ন আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক।

সোমবার দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার এজলাসে ইডির আবেদনের শুনানি ছিল। ইডির হয়ে সওয়াল করেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। আর সনিয়াদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী অভিষেক সিঙ্ঘভি এবং আরএস চিমা।

গত ১৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির চার্জশিটে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আদালত জানিয়েছিল, এই মামালায় তহবিল তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর অধীনে দায়ের করা অভিযোগে ত্রুটি রয়েছে। দিল্লির আদালতের বিশেষ বিচারক বিশাল গোনগে জানান, ইডির আবেদন ব্যক্তিগত অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছে। কোনও এফআইআরের ভিত্তিতে নয়। কেন এই মামলায় ইডি এফআইআর করেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারক।

গত মাসেই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া, রাহুল, কংগ্রেস নেতা সুমন দুবে, স্যাম পিত্রোদা-সহ কিছু সংস্থা, সংগঠন যেমন ইয়ং ইন্ডিয়ান, ডটেক্স মার্চেন্ডাইস লিমিটেড, ডটেক্সের প্রোমোটার সুনীল ভাণ্ডারির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল দিল্লি পুলিশ। সেই কথা উল্লেখ করে বিচারক গোনগে জানান, অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত যথাযথ এফআইআর নথিভুক্ত না-হলে অর্থ পাচারের তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট মামলা বৈধ হিসাবে বিবেচিত হবে না। আদালত স্মরণ করেছে, পিএমএলএ-র বিধান অনুযায়ী, তদন্ত শুরুর আগে ইডি-কে একটি এফআইআর দায়ের করতে হবে। কিন্তু তা এখনও করা হয়নি তদন্তকারী সংস্থার তরফে। শুধু তা-ই নয়, এই মামলায় সিবিআই-ও এখনও পর্যন্ত কোনও এফআইআর দায়ের করেনি। ইডি এফআইআর দায়ের না-করেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে, যা আইনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ! আইনি প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলে নিম্ন আদালত।

জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে ২০১৩ সালে, মনমোহন সিংহের জমানাতেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। যার মূল হোতা ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর অভিযোগ, ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’ নামে যে সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশির ভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, ইয়ং ইন্ডিয়া অলাভজনক সংস্থা। এই সংস্থা কোনও মালিককে ডিভিডেন্ড (মুনাফার ভাগ) দিতে পারে না। কোনও সম্পত্তির হাতবদল বা আর্থিক লেনদেনও হয়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন