Narendra Modi on Terrorism

‘রুটি খাও, শান্তিতে থাকো, নয়তো আমার গুলি রয়েইছে’! সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আবার পাকিস্তানকে মোদীর সতর্কবার্তা

নরেন্দ্র মোদীর ভাষণে উঠে এসেছে পর্যটন থেকে অর্থনীতির কথা। ভুজের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারত পর্যটনে বিশ্বাস করে। কিন্তু পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকেই পর্যটন হিসাবে বিবেচনা করে, যা বিশ্বের জন্য খুবই বিপজ্জনক।’’

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ২২:৫৬
Have roti, live in peace, PM Narendra Modi again warn Pakistan in Gujarat

ভুজের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: সংগৃহীত।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আবার এক বার পাকিস্তানকে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে সে দেশের জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে! পাকিস্তানকে হয় শান্তি বেছে নিতে হবে, নয়তো তাঁর ‘গুলি’ প্রস্তুত রয়েছে।

Advertisement

সোমবার গুজরাতে ‘রোড শো’ থেকে জনসভা— একাধিক কর্মসূচি ছিল মোদীর। প্রথমে গুজরাতে দাহোদে জনসভা করেন তিনি, পরে ভুজে। সেই জনসভা থেকে আবার এক বার পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের রোগ থেকে মুক্ত করতে নাগরিকদেরই এগিয়ে আসতে হবে। সুখে-শান্তিতে দিন কাটাও, রুটি (খাবার) খাও, নয়তো আমার গুলি তো আছেই!’’

মোদীর ভাষণে উঠে এসেছে পর্যটন থেকে অর্থনীতির কথাও। ভুজের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারত পর্যটনে বিশ্বাস করে। কিন্তু পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকেই পর্যটন হিসাবে বিবেচনা করে, যা বিশ্বের জন্য খুবই বিপজ্জনক। আমি পাকিস্তানের জনগণের কাছে জানতে চাই, কী অর্জন করেছে তাঁদের দেশ? আজ ভারত বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। সেখানে আপনাদের (পাকিস্তান) অবস্থা কোথায়?’’ পাক নাগরিকদের উদ্দেশে মোদীর বার্তা, ‘‘যারা সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহ দিচ্ছে, তারাই আপনাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিয়েছে!’’

জনসভায় মোদীর ভাষণের প্রায় একটা বড় অংশ জুড়েই ছিল পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদ। তিনি বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ে হামলার পর আমি ১৫ দিন অপেক্ষা করেছিলাম। আমি আশা করেছিলাম, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পাকিস্তান। কিন্তু সব দেখে মনে হচ্ছে, সন্ত্রাসই তাদের রুটিরুজি। ‘অপারেশন সিঁদুর’ ছিল সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতেই।’’ সাম্প্রতিক সময়ে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যেকার সামরিক অস্থিরতার প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘‘৯ মে রাতে পাকিস্তান যখন ভারতের নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল, তখন আমাদের সেনাবাহিনী দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে তার জবাব দেয়। ধ্বংস করে ওদের (পাকিস্তান) বিমানঘাঁটি।’’

শুধু ভুজ নয়, গুজরাতের দাহোদের জনসভা থেকেও সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তান নিয়ে মুখ খোলেন মোদী। পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘যারা সিঁদুর মুছে দিতে আসবে, তাদেরও মুছে যেতে হবে, এটা নিশ্চিত।’’ ‘অপারেশন সিঁদুর’কে ভারতীয়দের ‘সংস্কার’ এবং ‘ভাবনার অভিব্যক্তি’ বলেও উল্লেখ করেছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘যারা সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে, তারা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি, মোদীর সঙ্গে মোকাবিলা করা কতটা কঠিন!’’

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং এক জন নেপালি। অভিযোগ, জঙ্গিরা বেছে বেছে একটি বিশেষ ধর্মের পুরুষদের গুলি করে খুন করেছিল। মহিলা বা শিশুদের মারা হয়নি। অনেকেই চোখের সামনে স্বামীকে মরতে দেখেছেন। এই ঘটনার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল ভারত। গত ৬ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় সেনা। তার পাল্টা হিসাবে পাকিস্তান হামলা চালায়। টানা চার দিন ধরে ভারত এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। গত ১০ মে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। তবে সংঘর্ষবিরতি পরবর্তী পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যেই চাপা উত্তেজনা রয়েছে। চলছে বাগ্‌যুদ্ধও। সেই আবহেই আবার মোদীর মুখে সন্ত্রাসবাদ দমন এবং পাকিস্তানের ভূমিকার কথা শোনা গেল। জনসভা হোক বা ‘মন কী বাত’— মোদী সর্বত্রই সন্ত্রাসবাদ, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন