(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে অবশেষে মুখ খুলল ভারত। গত বৃহস্পতিবার রাতে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। সরকারি ভবন, সংবাদপত্রের দফতরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের উপর নৃশংস অত্যাচারের খবরও প্রকাশ্যে আসছে। ময়মনসিংহে দীপুচন্দ্র দাস নামের এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় দীপুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানাল ভারত।
ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নিবিড় ভাবে নজর রেখেছে ভারত। সে দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আধিকারিকেরা যোগাযোগ রাখছেন। সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন— তা তাঁদের জানানো হয়েছে। দীপুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ভারত সেই আবেদন জানিয়েছে।’’
ময়মনসিংহের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের সামনে শনিবার এক দল যুবক বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। কয়েকটি বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে ভুয়ো এবং অতিরঞ্জিত খবর প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে রণধীর বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের একাংশের মধ্যে আমরা ভুয়ো প্রচার দেখতে পাচ্ছি। সত্যিটা হল, শনিবার নয়াদিল্লির বাংলাদেশি দূতাবাসের সামনে ২০-২৫ জন যুবক জড়ো হয়েছিলেন। তাঁরা ময়মনসিংহে দীপুর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং স্লোগান দেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবি জানান। দূতাবাসে জোর করে প্রবেশের কোনও চেষ্টা করা হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের কিছু ক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে দেয়। এর ফুটেজ প্রকাশ্যেই রয়েছে।’’ ভারতের মাটিতে অবস্থিত যে কোনও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নয়াদিল্লি বদ্ধপরিকর, জানিয়েছেন রণধীর।
ময়মনসিংহে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ২৭ বছরের দীপু। কাজ করতেন একটি পোশাকের কারখানায়। বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অশান্তির বলি হন দীপু। অভিযোগ, উন্মত্ত জনতার হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পিটিয়ে খুন করার পর তাঁর দেহ একটি গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তার পর প্রকাশ্যেই তাতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। সেই ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যে দীপুকে খুনের ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিবৃতি দিয়ে পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। পৃথক বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের পুলিশও। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের পর সে দেশের সংখ্যালঘুরা আতঙ্কিত। ভারত তা নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করল।