বাংলাদেশের ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় পদক্ষেপ করল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। গ্রেফতার করা হল সাত জনকে। শনিবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে একটি বিবৃতি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে।
ময়মনসিংহে নিহত ওই যুবকের নাম দীপু দাস। বছর ২৭-এর যুবক স্থানীয় একটি পোশাকের কারখানায় কাজ করতেন। ভালুকা উপজেলায় একটি বাড়িতে তিনি ভাড়া থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাতে উন্মত্ত জনতা তাঁকে ধরে ফেলে। বেধড়ক মারধর করা হয়। যুবকের মৃত্যুর পর দেহ গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে জনতা। তার পর প্রকাশ্যে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। ইউনূস বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপুচন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সাত ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
ধৃতদের নামও প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার দফতর। তাঁরা হলেন, ১৯ বছরের মহম্মদ লিমন সরকার, ১৯ বছরের মহম্মদ তারেক হোসেন, ২০ বছরের মহম্মদ মানিক মিয়া, ৩৯ বছরের এরশাদ আলি, ২০ বছরের নিজুম উদ্দীন, ৩৮ বছরের আলমগির হোসেন এবং ৪৬ বছরের মহম্মদ মিরাজ হোসেন আকন।
ময়মনসিংহে হিংসার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল স্থানীয় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পর দীপুর দেহের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু রাত পর্যন্ত তাঁর পরিবারের আর কোনও সদস্যের খোঁজ পায়নি পুলিশ। কেউ আনুষ্ঠানিক ভাবে অভিযোগ দায়ের না-করায় রাত পর্যন্ত মামলা রুজুও হয়নি। পরে শুক্রবার এই ঘটনায় পদক্ষেপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুর পর দেশ জুড়ে অরাজক ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ হাদির মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসে। তার পর উন্মত্ত জনতার ‘সংগঠিত জনরোষ’ আছড়ে পড়ে দিকে দিকে। সরকারি ভবন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়, সংবাদপত্রের দফতরে হামলা চালানো হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ভাঙচুর হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃতিকেন্দ্র ছায়ানট ভবনেও।