এক দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার প্রকাশিত হল বাংলাদেশের প্রথম সারির দুই সংবাদপত্র প্রথম আলো এবং ডেলি স্টার। শুক্রবার এই দুই পত্রিকার কোনও সংস্করণ প্রকাশ করা যায়নি। অফলাইন ও অনলাইন মাধ্যমে কাজ বন্ধ ছিল দীর্ঘ ক্ষণ। ওই দুই সংবাদপত্রের দীর্ঘ ইতিহাসে এমন পরিস্থিতি কখনও আসেনি বলে জানাচ্ছেন কর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাতে দু’টি দফতরেই তাণ্ডব চালায় উন্মত্ত জনতা। এখনও সেই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
তেজগাঁও থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তার সঙ্গে ডেলি স্টার-এর তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা যায়নি। তবে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই সংবাদপত্রের ক্ষতিগ্রস্ত দফতর শুক্রবার সকালে পরিদর্শন করেছেন ঢাকা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা।
প্রথম আলো-র যে মুদ্রিত সংস্করণ শনিবার প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রথম পাতার প্রথম খবরের শিরোনাম— ‘প্রথম আলো-ডেলি স্টার আক্রান্ত’। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাপ্রবাহ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়ার কথা এই প্রতিবেদনে রয়েছে। এ ছাড়া, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির শেষকৃত্য সংক্রান্ত প্রতিবেদনও রয়েছে প্রথম পাতায়। দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিবৃতি।
আরও পড়ুন:
ডেলি স্টার বাংলাদেশের প্রথম সারির ইংরেজি সংবাদপত্র। শনিবার তার প্রথম পাতার শিরোনামে রয়েছে একটিই শব্দ— ‘আনবাওড’ (আপসহীন)। হামলা বা হুমকির সামনে মাথা নত না করার বার্তা দিয়েছে এই পত্রিকা। হাদির শেষকৃত্য সংক্রান্ত খবরও ডেলি স্টার-এর প্রথম পাতায় রয়েছে।
এই দুই পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে শুক্রবারই ফোনে কথা বলেছেন ইউনূস। তাঁদের উপর হামলার নিন্দা করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে বার্তা দিয়েছেন।
হাদির মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর। তার পর থেকেই দেশ জুড়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ‘সংগঠিত জনরোষ’ আছড়ে পড়ে একাধিক সরকারি ভবন, প্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগের কার্যালয়, এমনকি বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানের বাসভবনেও। রাতেই উত্তেজিত জনতা ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকায় প্রথম আলো এবং ডেলি স্টার-এর দফতরের সামনে জড়ো হয়। প্রথমে প্রথম আলো-র দফতরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর ডেলি স্টার-এর দফতরের দিকে ধেয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। দু’টি তলায় ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই সময় ১০ তলা ভবনের ছাদে কোনও রকমে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা। ভোর সাড়ে ৪টের পর বাংলাদেশের সেনার হস্তক্ষেপে দমকলবাহিনী তাঁদের উদ্ধার করে।