বাংলাদেশে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই সমাধিস্থ করা হবে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে। শুক্রবার রাতে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুলের সমাধি রয়েছে। তা ছাড়াও একাধিক শিক্ষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সমাধিস্থ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই নির্দিষ্ট চত্বরে। এ বার সেখানে স্থান পাবেন হাদি।
বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, হাদিকে নজরুলের পাশে সমাধিস্থ করার আর্জি জানিয়েছিল তাঁর পরিবার। এ ছাড়া, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের কাছ থেকে চিঠি পান কর্তৃপক্ষ, সেখানেও অনুরূপ আর্জি জানানো হয়। এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। অনলাইন মাধ্যমের সেই বৈঠকেই হাদির সমাধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন:
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হন হাদি। টানা ছ’দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের পর হার মেনেছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারি উদ্যোগে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসে। এর পর শুরু হয় তাণ্ডব। ‘সংগঠিত জনরোষে’ ছারখার হয়ে যায় বাংলাদেশের একাধিক সরকারি ভবন, শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের কার্যালয়। রেহাই পায়নি সংবাদমাধ্যমও। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদন উড়িয়ে রাতভর হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। দেশের প্রথম সারির দুই সংবাদপত্র প্রথম আলো এবং ডেলি স্টার-এর দফতরে ঢুকে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙা হয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংস্কৃতিকেন্দ্র ছায়ানট ভবন, উদীচীর কার্যালয়। এই পরিস্থিতিতে শনিবার হাদির শেষকৃত্য ঘিরে বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
হাদির স্মৃতি সম্মান জানাতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশে। ইউনূসের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, দুপুর ২টো নাগাদ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজ়ায় হাদির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তার পর দেহ পাঠানো হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থল প্রস্তুত করা হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যাতেই সিঙ্গাপুর থেকে হাদির দেহ ঢাকায় পৌঁছেছিল। আপাতত তা হিমঘরে রাখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শেষকৃত্য এবং সমাধিকে কেন্দ্র করে নতুন অশান্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।