Delhi Blast

সঙ্গীরা ধরা পড়তেই ‘প্রমাণ’ লোপাটের চেষ্টা! বন্ধ করে দেন ৫টি ফোন, গাড়িতে বিস্ফোরক নিয়ে দিল্লি পালাচ্ছিলেন উমর?

উমরের নামে পাঁচটি মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত ছিল। কিন্তু ঘটনার দিন দশেক আগে থেকেই সবক’টি ফোন বন্ধ করে দেন ওই যুবক। ৩০ অক্টোবরের পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। ওই সময়ে চিকিৎসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেননি উমর।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০২
(বাঁ দিকে) দিল্লির বিস্ফোরণের পরের ছবি। অভিযুক্ত উমর মহম্মদ (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) দিল্লির বিস্ফোরণের পরের ছবি। অভিযুক্ত উমর মহম্মদ (ডান দিকে) ছবি: সংগৃহীত।

একে একে ধরা পড়ছিলেন সঙ্গীরা। কে‌উ ফরিদাবাদ, কেউ কাশ্মীর, কেউ সাহারানপুর থেকে। সম্ভবত তাতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন চিকিৎসক উমর উন-নবি বা উমর মহম্মদ— দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে ‘ঘাতক’ সেই গাড়ির চালক। আর সে কারণেই বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং ডিটোনেটর নিয়ে তড়িঘড়ি গাড়িতে চড়ে রওনা দিয়েছিলেন ফরিদাবাদ থেকে দিল্লির উদ্দেশে। দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে এ বার এমনটাই অনুমান করছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

তদন্তকারীদের সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার দিল্লির অদূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে ৩৬০ কেজি আরডিএক্স তৈরির রাসায়নিক (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট) উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, উত্তর ভারতের বিভিন্ন অংশে অভিযান চালিয়ে মোট ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সন্দেহভাজনেরা। তাই মজুত থাকা বাকি বিস্ফোরক গাড়িতে তুলে উমরের হাত দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। আবার, এমনটাও হতে পারে যে ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই তাঁরা ‘প্রমাণ’ লোপাট করতে অবশিষ্ট বিস্ফোরক দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলেন। তদন্তকারী সূত্রে খবর, উমরের গাড়িতে তরল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং একটি ডিটোনেটর ছিল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্তা সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইম্‌সকে বলেন, ‘‘ফরিদাবাদ এবং জম্মু-কাশ্মীর থেকে বাকিদের আটক করা হলেও উমর কোনও ভাবে পালিয়ে যান। তবে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে এবং ধরা পড়ার ভয়েই শেষমেশ তাড়াহুড়ো করে এমন কাজ করে বসেন তিনি।’’

তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, উমরের নামে পাঁচটি মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত ছিল। কিন্তু ঘটনার দিন দশেক আগে থেকেই সবক’টি ফোন বন্ধ করে দেন ওই যুবক। ৩০ অক্টোবরের পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। ওই সময়ে চিকিৎসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেননি উমর। ৯ নভেম্বর ফরিদাবাদে এক অভিযানে ২,৯০০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ডিটোনেটর, টাইমার এবং রাইফেল উদ্ধার হওয়ার পর পুরোপুরি আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তদন্তকারী ওই কর্তা বলেন, ‘‘ওই যুবক হয়তো চাপের মধ্যে ছিলেন। আসলে তিনি বুঝতে পারছিলেন যে তাঁর সব রাস্তা বন্ধ হয়ে আসছে। বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই অবশিষ্ট অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট এবং একটি ডিটোনেটর নিয়ে দিল্লিতে পালিয়ে যান তিনি।’’

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা উমর পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। শ্রীনগরের এক মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারির পড়াশোনা করেছিলেন ৩৬ বছর বয়সি উমর। ২০১৭ সালে এমবিবিএস পাশ করেন। পরিবারের দাবি, খুবই শান্ত এবং চুপচাপ স্বভাবের ছিলেন উমর। সব সময় পড়াশোনা নিয়েই থাকতেন। এ হেন ছেলে কী ভাবে এমন চক্রে জড়িয়ে পড়লেন, ভেবে পাচ্ছেন না পরিজনেরা।

Advertisement
আরও পড়ুন