Maharashtra Politics

‘ভোটারদের ঘুষ দিচ্ছে বিজেপি’, দাবি শিন্দেসেনা বিধায়কের! পুরভোটের আগে মহারাষ্ট্রে এনডিএ-তে অন্তর্দ্বন্দ্ব

মঙ্গলবা মহারাষ্ট্রের কয়েকটি পুরসভায় ভোট। তার আগে কঙ্কাভ্যালির বিজেপি নেতা বিজয় কেনাওয়াদেকরের বাড়িতে ‘গোপন ক্যামেরা অভিযান’ চালিয়ে টাকা বিলির প্রমাণ সংগ্রহের দাবি করেছে শিন্দেসেনা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ১০:২৬
(বাঁদিকে) দেবেন্দ্র ফড়ণবীস এবং একনাথ শিন্দে (ডানদিকে)।

(বাঁদিকে) দেবেন্দ্র ফড়ণবীস এবং একনাথ শিন্দে (ডানদিকে)। —ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের সঙ্গে কি দূরত্ব বাড়ছে উপমুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান একনাথ শিন্দের? পুরভোটের আগে শাসকজোট ‘মহাজুটি’র অন্তর্বিরোধ প্রকাশ্যে আসায় এই জল্পনা দানা বেঁধেছে। শিন্দেসেনার বিধায়ক নীলেশ রানে বৃহস্পতিবার সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে আসন্ন পুরনির্বাচনের আগে ভোটারদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

Advertisement

আগামী মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) মহারাষ্ট্রের কয়েকটি পুরসভায় ভোট। তার আগে নীলেশের অভিযোগ, কঙ্কাভ্যালির বিজেপি নেতা বিজয় কেনাওয়াদেকরের বাড়িতে ‘গোপন ক্যামেরা অভিযান’ (স্টিং অপারেশন) চালিয়ে টাকা বিলির প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন তিনি। যদিও নীলের অভিযোগ খারিজ করেছেন তাঁরই ভাই তথা মহারাষ্ট্রের বিজেপি মন্ত্রী নীতেশ রানে। প্রসঙ্গত, নীলেশ-নীতেশের বাবা নারায়ণ রানে রত্নগিরি-সিন্ধুদুর্গের বর্তমান বিজেপি সাংসদ। একদা বালাসাহেব ঠাকরের স্নেহধন্য নারায়ণ অবিভক্ত শিবসেনায় থাকাকালীন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। পরে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সে রাজ্যের রাজস্বমন্ত্রী হন। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিজেপিতে যোগ দিয়ে ২০২১-২৪ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন।

মহারাষ্ট্রের শাসকজোট ‘মহাজুটি’তে বিজেপি, অজিত পওয়ারের এনসিপি ছাড়াও রয়েছে শিন্দের শিবসেনা। গত কয়েক দিন ধরেই জোটের অন্দরে অসন্তোষের ইঙ্গিত মিলছিল। চলতি মাসের গোড়ায় মুম্বইয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফডণবীসের ডাকা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গরহাজির ছিলেন শিবসেনার মন্ত্রীরা। এর পরে শিন্দে স্বয়ং দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে বৈঠক করে মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগ তুলেছিলেন। মঙ্গলবারে কয়েকটি পুরসভার ভোটের শিন্দেসেনা আলাদা ভাবে লড়ছে। ২০২৪ সালে মহারাষ্ট্রের ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল ‘মহাজুটি’ (বিজেপি, শিন্দের শিবসেনা এবং অজিত পওয়ারের এনসিপি)। তবে তার পর থেকেই নানা কারণে শাসক শিবিরের জুটির মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বিজেপি এবং শিন্দের মধ্যে মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসে। যদিও শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে শিন্দেকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় ফডণবীসকে। শিন্দেকে রাখা হয় উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে। সেই থেকেই এই দুই প্রধানের ‘দ্বন্দ্ব’ চর্চার কেন্দ্রে।

২০২২ সালে রাজনৈতিক নাটক দেখেছিল মহারাষ্ট্র। শিবসেনা শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে ৪০ জন বিধায়ককে নিয়ে দল ছাড়েন শিন্দে। মহাবিকাশ আঘাড়ীর (শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস) সরকারের পতন হয়। পরে ওই জোট থেকে কয়েক জন বিধায়ককে নিয়ে বেরিয়ে আসেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিতও। পরে দু’জনই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেন। সেই সরকারে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় শিন্দেকে। উপমুখ্যমন্ত্রী হন ফডণবীস এবং অজিত। কিন্তু ২০২৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর শিন্দের মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানো ঘিরে তৈরি হওয়া চোরাস্রোত এ বার প্রকাশ্যে চলে এল। ডিসেম্বরে পুরসভার ভোটের পরেই দেশের বৃহত্তম পুরনিগম বৃহন্মুম্বই (বিএমসি)-র নির্বাচন হওয়ার কথা। সেখানেও দু’দল আলাদা ভাবে লড়তে পারে বলে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত মিলেছে।

Advertisement
আরও পড়ুন