Odisha Self Immolation

কলেজে গায়ে আগুন: ‘কী ধরনের ফেভার চাইছি বুঝতে পারছ না’! অধ্যাপকের বিরুদ্ধে প্রমাণ মেলেনি এই অভিযোগের, বলল তদন্ত কমিটি

গত ১২ জুলাই কলেজের ভিতরেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন এক ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিএডের বিভাগীয় প্রধান কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন। সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ১৬:৪৯
What did the Internal complaint committee claimed on Odisha college student\\\\\\\'s death

—প্রতীকী ছবি।

যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠার পরই অধ্যাপককে অন্যত্র বদলি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওড়িশার কলেজে গায়ে আগুন দিয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় এমনই জানাল সংশ্লিষ্ট কলেজের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির কোঅর্ডিনেটর জয়শ্রী মিশ্রের অবশ্য দাবি, পড়ুয়াদের নেতিবাচক তথ্যের ভিত্তিতে অধ্যাপককে সরানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদিও অধ্যাপকের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পদক্ষেপই করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

তদন্ত কমিটির কোঅর্ডিনেটরের দাবি, অভিযুক্ত অধ্যাপককে তাঁর আচরণ এবং পড়ানোর পদ্ধতি শোধরানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এর পরই তদন্ত কমিটি দাবি করে, অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আত্মঘাতী ছাত্রী বা অন্য কোনও মহিলাকে যৌন হেনস্থার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে প্রকাশ, কমিটির এক সদস্য মিনতি শেঠি আবার দাবি করেছেন, ছোট ছোট ভুলের জন্য অভিযুক্ত অধ্যাপক অনেক সময় পড়ুয়াদের ক্লাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখতেন। দেরি করে আসার জন্য অভিযোগকারী ছাত্রীকেও এক দিন ক্লাসের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন ওই অধ্যাপক।

শেঠির কথায়, ‘‘বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়টিকে ওই ছাত্রী মেনে নিতে পারেননি। তাঁকে ৩০ জুনের পরীক্ষাতেও বসতে দিতে চাননি অধ্যাপক। এই ঘটনায় আরও বেশি অপমানিত বোধ করেছিলেন তিনি। আর তার পরই তিনি মানসিক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন পর দিনই।’’ শেঠি আরও জানিয়েছেন যে, অভিযোগকারী ছাত্রী তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছিলেন যে, অভিযুক্ত অধ্যাপক তাঁর কাছে ‘ফেভার’ চেয়েছিলেন। যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কী ধরনের ‘ফেভার’-এর কথা বলা হয়েছিল? তখন ওই ছাত্রী কমিটির কাছে দাবি করেন, অধ্যাপক তাঁকে বলেন, ‘‘তুমি শিশু নও যে বুঝতে পারছ না কোন ধরনের ফেভারের কথা বলতে চাইছি।’’ শেঠির দাবি, অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যে ‘ফেভার’-এর অভিযোগ তোলা হয়েছে, সে রকম কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে প্রমাণ জোগাড় করাও সহজ নয়।

আত্মঘাতী ছাত্রীর বাবা কলেজের উদাসীনতা এবং তদন্ত কমিটির ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ রিপোর্টকেই তাঁর কন্যার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন। বালেশ্বরের কলেজের ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উত্তাল গোটা ওড়িশা। বুধবার সকালে বিধানসভার সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতার ধস্তাধস্তি হয়। পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান চালানো হয়। অন্য দিকে, বালেশ্বরে আট ঘণ্টার জন্য বন্‌ধ ডেকেছিল বিজু জনতা দল (বিজেডি)।

প্রসঙ্গত, গত ১২ জুলাই কলেজের ভিতরেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন এক ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিএডের বিভাগীয় প্রধান কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন। সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করছিলেন। মানসিক ভাবে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষকে বার বার জানালেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। তদন্ত করে কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটি জানিয়ে দেয়, এই ঘটনায় কাউকে দোষী পাওয়া যায়নি। কলেজের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে আত্মঘাতী হন কলেজছাত্রী। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement
আরও পড়ুন