কাজের সময়ের বাইরেও কর্মীকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কাজের সময়ের বাইরে অফিসের ফোন বা ইমেল প্রত্যাখ্যান করার আইনি অধিকার যাতে কর্মীরা পান, তার জন্য বিল আনা হয়েছে লোকসভায়। শুক্রবার এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে বিলটি পেশ করার পর থেকেই তা আলোচনার কেন্দ্রে। বিলে বলা হয়েছে, কাজের সময়ের বাইরে অফিস থেকে কাজ সংক্রান্ত কোনও ফোন বা ইমেল বা মেসেজ এলে তা প্রত্যাখ্যান করার অধিকার থাকবে যে কোনও কর্মচারীর। অফিসের সময়ের বাইরে তিনি অফিসের কাজ করতে বা তার সঙ্গে কোনও ভাবে জুড়ে থাকতে বাধ্য নন। তবে সুপ্রিয়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘প্রাইভেট মেম্বার’স বিল’ হিসাবে এই বিল লোকসভায় পেশ করেছেন। সরকারের সঙ্গে এই বিলের কোনও যোগ নেই। বিলটি প্রত্যাখ্যান করে দেওয়াও হতে পারে। ফলে এর আইনে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
সুপ্রিয়ার এই বিলে বলা হয়েছে, অফিসের কাজের সময়ের বাইরে বাকি সময়টুকু এবং ছুটির দিন কর্মীর ‘ব্যক্তিগত পরিসর’। এই সময়ে তাঁকে কোনও কাজের জন্য ফোন করা হলে বা অন্য কোনও ভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উত্তর না দেওয়ার অধিকার আছে সংশ্লিষ্ট কর্মীর। কর্মীদের স্বার্থে এই অধিকার আইনসম্মত হওয়া দরকার। অনেক ক্ষেত্রে অফিসের ফোন বা ইমেল অবহেলা করতে ভয় পান কর্মীরা। মনে করেন, তা করলে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। এই ভয় নির্মূল করা দরকার, বলেছেন সুপ্রিয়া।
বিল অনুযায়ী, যে কোনও রকম যোগাযোগের মাধ্যমই অবহেলা করতে পারেন কর্মীরা। ভিডিয়ো কলের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হওয়া উচিত নয়। তবে জরুরি পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বিলে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। বলা বয়েছে, কোনও বাস্তবিক জরুরি পরিস্থিতি যদি তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে কর্মী এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে এই নিয়ম শিথিল হতে পারে। এ ছাড়া, যদি কর্তৃপক্ষ নিয়ম ভাঙেন, কর্মীকে বেতনের এক শতাংশ জরিমানা হিসাবে দেওয়ার কথাও বিলে বলা হয়েছে।
সুপ্রিয়া জানিয়েছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের কারণে বর্তমানে কাজের ধরন বদলে গিয়েছে। কর্মীদের দিয়ে অফিসের কাজের সময়ের বাইরেও কাজ করিয়ে নেওয়া স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে কর্মীদের ঘুমের সমস্যা, মানসিক চাপ এবং নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ২০১৯ সালে প্রথম বার এই ধরনের প্রস্তাব লোকসভায় এনেছিলেন সুপ্রিয়া।
লোকসভা বা রাজ্যসভার সাংসদ যদি মনে করেন, কোনও বিষয়ে আইন হওয়া প্রয়োজন, বা আলোচনার দরকার, তা হলে তাঁরা সেই সংক্রান্ত বিল সংসদে পেশ করতে পারেন। অনেক সময় জনমত যাচাইয়ের জন্যও এই বিল আনা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকার সেই প্রস্তাবিত বিল নিয়ে জবাব দিলে তা প্রত্যাহার করা হয়ে থাকে। শুক্রবার যে বিল সুপ্রিয়া পেশ করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, কর্মীদের স্বার্থেই আইন হওয়া উচিত।