Akash Ambani on Nita and Mukesh Parenting

ঠাকুরদা ধীরুভাই, বাবা মুকেশের কয়েকটি বাক্যই আকাশের সাফল্যের জন্য দায়ী! ৩ প্রজন্মের যোগসূত্র কেমন

নীতা এবং মুকেশ অম্বানী তাঁদের তিন সন্তান আকাশ, ইশা এবং অনন্তকে সাধারণ জীবনের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। সাধারণ ট্রেনে চাপানো, নিজের ঘর পরিষ্কার করানো, বয়স্কদের সম্মান করা, সমস্ত শিক্ষাই দিয়েছিলেন তারকা দম্পতি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৫ ২০:০১
অম্বানীদের দুই প্রজন্ম।

অম্বানীদের দুই প্রজন্ম। ছবি: সংগৃহীত।

দেশের অন্যতম ধনকুবেরের সন্তান। ছোট থেকেই অর্থের প্রাচুর্য দেখেছেন। জীবনে অপ্রাপ্তি নেই কোনও, অন্তত সম্পদের নিরিখে। কিন্তু এই ধনসম্পত্তিই একদিন অভিশাপ হয়ে উঠতে পারত। শিশুরা অতিরিক্ত প্রাচুর্যের মধ্যে থাকলে তাদের মূল্যবোধ গড়ে ওঠে না অধিকাংশ ক্ষেত্রে। কিন্তু অম্বানী পরিবার শুরু থেকেই সে কথা মাথায় রেখেছিল। তাই নীতা এবং মুকেশ অম্বানী তাঁদের তিন সন্তান আকাশ, ইশা এবং অনন্তকে সাধারণ জীবনের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন। সাধারণ ট্রেনে চাপানো, নিজের ঘর পরিষ্কার করানো, বয়স্কদের সম্মান করা, সমস্ত শিক্ষাই দিয়েছিলেন তারকা দম্পতি। মানুষ হিসেবে সফল হওয়ার পাশাপাশি বাবা মুকেশ অম্বানী এবং ঠাকুরদা ধীরুভাই অম্বানীর কয়েকটি কথা আজও জ্যেষ্ঠ পুত্র আকাশ অম্বানীর কাছে মূল্যবান। তিনি বিশ্বাস করেন, অনুপ্রেরণা দূরের জগৎ থেকে আসে না। পরিবারের ছোট ছোট মুহূর্ত, মা-বাবার অভ্যাস আর একসঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতাই তাঁকে আজকের এই মানুষটিতে পরিণত করেছে।

Advertisement

আকাশের বয়স এখন ৩২ বছরের কিছু বেশি। তিনিও শিল্পপতি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকেন। বড় হয়েছেন দুই ভাই-বোনের সঙ্গে। আজও সেই বাড়িতেই থাকেন। জীবনের এতখানি সময় পরিবারকে কাছ থেকে দেখে তিনি বুঝেছেন, সাফল্য কেবল ব্যবসার অঙ্কে নয়, বরং শৃঙ্খলা আর সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গির উপর দাঁড়িয়ে থাকে। সেখানেই ঠাকুরদা এবং বাবার কয়েকটি বাক্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

অম্বানী পরিবারের হাসিখুশি ছবি।

অম্বানী পরিবারের হাসিখুশি ছবি। ছবি: সংগৃহীত।

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রথম বার সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন আকাশ। সেখানে তিনি জানান, তাঁর আমেরিকায় থেকে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু এক দিন তাঁর বাবা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘তুমি ইন্টারনেট কেন ব্যবহার করো?’’ আকাশ বলেন, ‘‘পড়ি, লিখি, জ্ঞান অর্জন করি’’, তাতে মুকেশের জবাব, ‘‘তা হলে তুমি কি তোমার দেশের ১.২ বিলিয়ন (১২০ কোটি) মানুষের জন্য সেটা চাও না?’’ সে দিন আকাশ সিদ্ধান্ত নেন, তিনি ভারতেই কাজ করবেন।

তার পর থেকে তাঁর বাবা-ই নিজে হাতে ধরে তাঁকে কাজ শিখিয়েছেন। অন্য দিকে, শৈশবের আর একটি কথা তাঁর মনে পড়ে। তাঁর ঠাকুরদা ধীরুভাই অম্বানী তাঁকে এক দিন বলেছিলেন, ‘‘হারিয়ে যাওয়া টাকা আবার ফেরানো যায়। হারিয়ে যাওয়া সময় ফেরানো সম্ভব নয়। তাই খুব ভেবেচিন্তে সময় খরচ কোরো।’’ মুকেশের আরও একটি কথা মাথায় রেখে দিয়েছেন আকাশ। তাঁর বাবার পরামর্শ, মানুষকে ভরসা করলে মানুষও উল্টে ভরসা করবে। আর ব্যবসা কেবল সে রকমই এক পরিবেশে ফুলে ফেঁপে উঠতে পারে, যেখানে ভরসা, বিশ্বাস ও সম্মান রয়েছে।

একই সঙ্গে সদ্য এক সাক্ষাৎকারে এসে আকাশ বলেন, মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে বড় ভূমিকা রয়েছে তাঁর মা এবং পারিবারিক রীতি-নীতির। আকাশের কথায়, “আমরা, ভাইবোনেরা সব সময় একসঙ্গেই থেকেছি। রোজের জীবন থেকেই অনুপ্রেরণা মেলে, বিশেষ করে মা-বাবার কাছ থেকে।” তিনি জানান, তাঁর বাবা, মুকেশ আজও রাত ২টো পর্যন্ত প্রতিটি ইমেল নিজে পড়েন ও জবাব দেন। আকাশের কাছে এটাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আজ তিনি বোঝেন, দায়িত্বের ক্ষেত্রে কখনওই ফাঁকি দেওয়া যায় না।

অন্য দিকে মা নীতা আম্বানি শিখিয়েছেন সূক্ষ্ম বিষয়ের দিকে নজর দিতে। আকাশ বলেন, “আমরা একসঙ্গে ক্রিকেট দেখলে মা এমন সব খুঁটিনাটি ধরতে পারেন, যা আমাদের চোখেই পড়ে না। তাঁর এই সূক্ষ্ম দৃষ্টি আমাদের প্রতি দিন নতুন করে ভাবতে শেখায়।”

Advertisement
আরও পড়ুন