Wimbledon 2025

উইম্বলডনের সঙ্গে ‘ঘৃণার সম্পর্ক’ ভালবাসায় বদলাতে চান, হেরে প্রতিপক্ষের আচরণকে বিঁধলেন বিশ্বের এক নম্বর সাবালেঙ্কা

২০২১ এবং ২০২৩ সালের মতো এ বারও উইম্বলডনের সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছেন এরিনা সাবালেঙ্কা। বার বার তীরে এসে তরী ডোবায় হতাশ তিনি। যদিও ভবিষ্যতে উইম্বলডন জয়ের আশা ছাড়ছেন না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫ ১২:২১
Picture of Aryna Sabalenka

এরিনা সাবালেঙ্কা। ছবি: রয়টার্স।

দু’বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছেন। এক বার ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ফরাসি ওপেনের ফাইনাল খেলেছেন গত জুনে। কিন্তু উইম্বলডনে সেমিফাইনালের বাধা টপকানো হল না এরিনা সাবালেঙ্কার। ২০২১, ২০২৩ সালের মতো এ বারও হেরে গেলেন সেমিফাইনালে।

Advertisement

প্রতিযোগিতার ১৩ নম্বর বাছাই অ্যামান্ডা আনিসিমোভার কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর হতাশা লুকোতে পারেননি শীর্ষ বাছাই সাবালেঙ্কা। তিনি বলেছেন, উইম্বলডনের সঙ্গে তাঁর ঘৃণার সম্পর্ক। উইম্বলডন সেমিফাইনালে হারের পর নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করেন সাবালেঙ্কা। তবে হতাশা গোপন করতে পারেননি। তাঁর কথায় ফুটে উঠেছে, বার বার তীরে এসে তরী ডোবার আক্ষেপ। ২৭ বছরের খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘এই নিয়ে তিন বার সেমিফাইনালে হারলাম। এটা ভাবাও কঠিন। ২০২২ সালে আমাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তার পর চোট পেলাম। উইম্বলডনের সঙ্গে আমার সত্যিই ঘৃণার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। আশা করি, একদিন এই সম্পর্কটা বদলাতে পারব। ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি করতে পারব।’’

সাবালেঙ্কা আরও বলেছেন, ‘‘প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতায় খেলছি। প্রায় শেষ পর্যন্ত পৌঁছোচ্ছি। মনে হচ্ছে, স্বপ্নের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। তখনই ছন্দপতন হচ্ছে। হেরে যাচ্ছি। তখন মনে হয়, এটাই শেষ। মনে হয়, মরে যাই। আর থাকতে চাই না। এখানেই বোধহয় জীবনের শেষ।’’

সাবালেঙ্কার বক্তব্য, অনেকটা ইভান লেন্ডলের বিখ্যাত সেই উক্তির মতো। ১৯৮৬ এবং ১৯৮৭ সালে পর পর দু’বার ফাইনালে উঠেও উইম্বলডন জিততে পারেননি লেন্ডল। সেই হতাশা থেকে বলেছিলেন, ‘‘ঘাস গরুর খাদ্য।’’ সাবালেঙ্কার ‘ঘৃণার সম্পর্ক’ অনেকটা তেমনই।

ঐতিহ্যবাহী ‘ভেনাস রোজওয়াটার ডিশ’-এর (উইম্বলডনে মহিলা সিঙ্গলস চ্যাম্পিয়নকে যে শিল্ড দেওয়া হয়, তার নাম) সঙ্গে দূরত্ব ঘোচাতে না পেরে প্রতিপক্ষের একটি আচরণকেও দুষেছেন শীর্ষ বাছাই! ঠিক যেমন গত ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হারের পর কোকো গফের সমালোচনা করেছিলেন। তবে এ বার সাবালেঙ্কার বক্তব্য অনেকটা সংযত ছিল।

প্রথমে আনিসিমোভার প্রশংসা করে বলেছেন, ‘‘খুব আগ্রাসী টেনিস খেলল। যোগ্য হিসাবেই সেমিফাইনাল ম্যাচটা জিতেছে।’’ তার পরেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রতিপক্ষের আচরণ নিয়ে। দ্বিতীয় সেটে একটি শট সাবালেঙ্কা মিস্‌ করার আগেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন আনিসিমোভা। তা নিয়ে শীর্ষ বাছাই বলেছেন, ‘‘ও আগেই উদ্‌যাপন শুরু করে দিল। আমার মনে হয়, একটু তাড়াতাড়িই প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলেছে। তার পর আমার বিরক্তি আরও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলল, এ রকম নাকি প্রায়ই করে। সেই মুহূর্তে বিরক্ত লাগলেও আনিসিমোভাকে ধন্যবাদ। ওর ওই আচরণই আমাকে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। পিছিয়ে পড়েও ফিরে আসতে পেরেছি। যদিও সে সময় বেশ রেগে গিয়েছিলাম।’’

ম্যাচে এক বার নেটে বল লেগে সাবালেঙ্কার দিকের কোর্টের অংশে পড়ে। পয়েন্ট পান আনিসিমোভা। এ ভাবে পয়েন্ট পেলে সাধারণত টেনিস খেলোয়াড়েরা প্রতিপক্ষের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। টেনিসে এটাই দস্তুর। কিন্তু আনিসিমোভা সেমিফাইনালে দুঃখপ্রকাশ করেননি। তা নিয়েও সমালোচনা করেছেন সাবালেঙ্কা। তিনি বলেছেন, ‘‘এক বার দুঃখপ্রকাশও করল না। অবাকই হলাম একটু। ও হয়তো যে কোনও ভাবে জিততে চাইছিল। এটা ওর ব্যাপার। আনিসিমোভা যদি দুঃখপ্রকাশ করতে না চায়, যদি যে কোনও ভাবে পয়েন্ট পেলেই সন্তুষ্ট হয়, তা হলে কী আর বলব! কঠিন পরিস্থিতিতেও ওর হয়তো দুঃখপ্রকাশের কথা মনে হয় না। এগুলো ওর ব্যাপার।’’

বার বার উইম্বলডন সেমিফাইনালে হার এবং প্রতিপক্ষের আচরণ— ম্যাচের পর সব মিলিয়ে বিধ্বস্ত দেখিয়েছে সাবালেঙ্কাকে। অথচ আনিসিমোভা তাঁর অপরিচিত নন। দু’জনেই ফ্লরিডার বাসিন্দা। সেটাই হয়তো তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকিনের হতাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন