১০০ কিমি ছাড়িয়ে যেতে পারে ঝড়ের গতি! ঠিক কোন উপকূলে কখন আছড়ে পড়বে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’? এখন কত দূরে
সোমবারের মধ্যেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে যাবে। শক্তি বাড়িয়ে তা পরিণত হতে পারে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’। প্রবল আকারেই স্থলভাগের দিকে ধেয়ে যাবে ঘূর্ণিঝড়। সতর্কতা জারি করা হয়েছে একাধিক রাজ্যে।
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫৫
অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড়। —ফাইল চিত্র।
বঙ্গোপসাগরে নতুন করে ঘূর্ণিঝড় দানা বাঁধছে। নিম্নচাপ আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সোমবারের মধ্যেই তা থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে যাবে। শক্তি বাড়িয়ে তা পরিণত হতে পারে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’। মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে প্রবল আকারেই ঘূর্ণিঝড় আছড়়ে পড়বে উপকূলে।এর জন্য একাধিক রাজ্যকে সতর্ক করা হয়েছে। সতর্কতা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের কাছে পৌঁছোবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। মঙ্গলবার সেখানে মছিলিপত্তনম এবং কাকিনাড়ার কাছে কলিঙ্গপত্তনমের মাঝের অংশ দিয়ে তা স্থলভাগে আছড়়ে পড়বে। সেই সময়ে ১০০ কিলোমিটারও ছাড়িয়ে যেতে পারে হাওয়ার গতি। এখনও পর্যন্ত যা পূর্বাভাস, তাতে ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময়ে অন্ধ্র উপকূলে হাওয়া বইতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে। দমকা হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার।
এখনও পর্যন্ত নিম্নচাপ রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে। ঘণ্টায় সাত কিলোমিটার বেগে তা উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। শনিবার রাত পর্যন্ত নিম্নচাপের অবস্থান পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৪৪০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিম, বিশাখাপত্তনম থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, চেন্নাই থেকে ৯৭০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব, কাকিনাড়া থেকে ৯৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং ও়়ড়িশার গোপালপুর থেকে ১০৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব। রবিবারের মধ্যে এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। সোমবার তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড়। মঙ্গলবার তা প্রবল আকার নিয়ে অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়বে। অন্ধপ্রদেশের পাশাপাশি ওড়িশা, তামিলনাড়ুতেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্রে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। আপাতত হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার। তবে রবিবার রাত থেকেই ঝড় বাড়বে সমুদ্রের উপর। হাওয়ার গতি পৌঁছে যাবে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটারে। সোমবার ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে যাওয়ার পর সমুদ্রের উপরেও ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ২৭ তারিখের মধ্যেই সকলকে স্থলভাগে ফিরে আসার পরামর্শ দিয়েছে হাওয়া অফিস। ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়া নিষিদ্ধ। জারি হয়েছে লাল সতর্কতা।
মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। এই তিন দিন দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি বৃষ্টি হবে। ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদে।
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে জলপাইগুড়িতে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া, আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহে ভারী বৃ়ষ্টি হতে পারে। উত্তরের বাকি জেলায় বিক্ষিপ্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে বুধবারের পর থেকে।
