বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়ে গিয়েছে। তা থেকে আগামী সোমবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় জন্ম নেবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপটি ক্রমে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে।
শনিবার সকালে বিশেষ বুলেটিন দিয়ে নিম্নচাপের গতিবিধি বিশদে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আন্দামান সাগরের উপর যে ঘূর্ণাবর্ত ছিল, তা থেকে আগেই নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে। শুক্রবার রাতে তা ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ হয়। তার পর শনিবার তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। এই নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হবে এবং রবিবারের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ হিসাবে অবস্থান করবে সমুদ্রের উপর। সোমবার তা থেকে তৈরি হবে ঘূর্ণিঝড়। এই মুহূর্তে নিম্নচাপ অবস্থান করছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৪২০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে। এ ছাড়া, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ৯৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, তামিলনাড়ুর চেন্নাই থেকে ৯৯০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব, অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া থেকে হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং ও়ড়িশার গোপালপুর থেকে ১০৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্ব দিকে রয়েছে নিম্নচাপ।
আরও পড়ুন:
ক্রমে আরও পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে গভীর নিম্নচাপের আকার নেবে নিম্নচাপটি। ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে তার অভিমুখ হবে উত্তর-পশ্চিম দিক। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলের দিকে এগোতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। তা কতটা শক্তিশালী হবে, কোথায় আছড়ে পড়বে, কখন থেকে শক্তি হারাবে, এখনও স্পষ্ট নয়। ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়ে গেলে তার গতিবিধি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া যাবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় বৃষ্টি হবে। দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ন’টি জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তালিকায় রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া। কলকাতাতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে আগামী মঙ্গলবার। এ ছাড়া, উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টি হবে।
নিম্নচাপের কারণে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যে চলে গিয়েছেন, তাঁদের ফিরে আসতে হবে সোমবারের মধ্যেই। ঘূর্ণিঝ়ড় তৈরি হওয়ার পর সমুদ্রে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। কতটা শক্তি নিয়ে তা উপকূলের দিকে এগোবে, তখন হাওয়ার গতি কত হতে পারে, এখনও স্পষ্ট করেনি আলিপুর।