Business Industry Conclave

পুজোর পর রাজ্যে আবার শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করছে রাজ্য, ঘোষণা করলেন অমিত মিত্র

অমিত মিত্র জানান, গত তিন মাসে সিনার্জি কমিটির বৈঠকে মোট ৩১৬৫টি শিল্প প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এই সব প্রকল্পের সম্ভাব্য মোট বিনিয়োগের পরিমাণ এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংখ্যার বিচারে তা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য বলেই দাবি করছেন মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫ ১৯:০৩
Mamata Banerjee\\\\\\\'s government is organizing another industrial conference in the state after Puja

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। —ফাইল চিত্র।

২০২৬ সালেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে শিল্পের উন্নয়নের দিকে নজর দিতে চা‌ইছে রাজ্য সরকার। পুজোর পরই রাজ্যে একটি শিল্প সম্মেলনের আয়োজন হবে। মঙ্গলবার এই কথাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। কেন এই শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে, তা-ও জানান তিনি।

Advertisement

রাজ্যস্তরে শিল্পবিষয়ক সমন্বয় কমিটি বা সিনার্জি কমিটির কথা বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশমতো কমিটিও তৈরি হয়। মঙ্গলবার সেই কমিটির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠক শেষেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিল্প সম্মেলনের কথা ঘোষণা করেন অমিত। তিনি জানান, গত তিন মাসে সিনার্জি কমিটির বৈঠকে মোট ৩১৬৫টি শিল্প প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। সেই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে রিয়েল এস্টেট, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন-সহ একাধিক ক্ষেত্র। এই সব প্রকল্পের সম্ভাব্য মোট বিনিয়োগের পরিমাণ এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংখ্যার বিচারে তা যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য বলেই দাবি করছেন মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।

মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠকে অমিতের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, অর্থসচিব প্রভাতকুমার মিশ্র এবং শিল্পসচিব বন্দনা যাদব। রাজ্যের শিল্পের উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি করতেই শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান অমিত। কী ভাবে প্রকল্পগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে, তা-ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়। অমিত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রকল্প নির্বাচন করতে গিয়ে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। যে সব শিল্পের বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি, যেগুলি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং যেগুলির ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক সুবিধা রয়েছে— সেই সব বিষয় বিচার করেই প্রকল্পে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’’

কিছু নির্দিষ্ট শিল্পকে রাজ্যের উন্নয়নের মূল লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। সেই সব শিল্পের মধ্যে রয়েছে স্টিল, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, চিংড়ি রফতানি, মাছ এবং পোলট্রি উৎপাদন, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক পর্যটন, গয়না, তথ্যপ্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পোশাক, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ। সেই বিষয় উল্লেখ করে অমিত জানান, ইতিমধ্যেই বছরে ৭০ কোটি মার্কিন ডলার চামড়াজাত দ্রব্য রফতানি করে রাজ্য, যা দেশের মোট রফতানির প্রায় ৫০ শতাংশ। এ ছাড়াও গত এক বছরে রাজ্য থেকে ২.০৫ কোটি মার্কিন ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ রফতানি হয়েছে।

তার পরেই শিল্প সম্মেলনের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। তিনি জানান, রাজ্যের শিল্প উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ ও দিকনির্দেশ খুবই কার্যকর হচ্ছে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই পুজোর পর অনুষ্ঠিত হবে শিল্প সম্মেলন। এই সম্মেলনে রাজ্যের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত শিল্পক্ষেত্রগুলি নিয়ে আলোচনা হবে। শুধু তা-ই নয়, আলোচনায় থাকবে অন্যান্য সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলিও।

অনেকের মতে, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই কথা মাথায় রেখেই রাজ্যের শিল্পের উন্নয়নে দিশা দেখাতে ও বিনিয়োগকারীদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে শিল্পায়নের এই প্রয়াস রাজ্যের আর্থিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে, এমনই আশা করছে নবান্ন।

Advertisement
আরও পড়ুন