Dilip Ghosh on Election Defeat

আমি লড়তে চাইনি! ‘ইচ্ছার বিরুদ্ধে’ পার্টির টিকিট দেওয়া নিয়ে ফের সরব দিলীপ, হারের গ্লানি যায়নি প্রাক্তন সাংসদের

মেদিনীপুর আসনে ২০১৯ সালে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। ২০২৪ সালে তিনিই বর্ধমান-দুর্গাপুরে হারেন প্রায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ভোটে। কারণ বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা চক্রান্তের অভিযোগ করেছিলেন। ফের মুখ খুললেন মঙ্গলবার।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:১৩
Dilip Ghosh

দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটে ‘অচেনা মাঠে’ প্রথম বার হারের পর চক্রান্তের অভিযোগ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেই পরাজয়ের ‘গ্লানি’ এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ! মঙ্গলবার খড়্গপুরে দলীয় কার্যালয়ে বসে তিনি বলেই দিলেন, দলের ইচ্ছায় তিনি বর্ধমান-দুর্গাপুরে তৃণমূলের কীর্তি আজ়াদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়েছিলেন। নিজে থেকে ওই কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়তে চাননি। পাশাপাশি দিলীপ জানালেন, যদি দল আবার নির্দেশ দেয়, আবার তিনি ভোটে লড়বেন। আপাতত শুধুই কর্মী হিসাবে দলের কাজ করে যাবেন।

Advertisement

মেদিনীপুর আসনে ২০১৯ সালে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছিলেন দিলীপ। ২০২৪ সালে সেই তিনিই বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে হেরেছেন প্রায় ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ভোটে। হারের কারণ বলতে গিয়ে বিজেপি নেতা বলেছিলেন, “রাজনীতিতে সবই সম্ভব। তবে কী কারণে হয়েছে, কে, কী করেছে, সবই পর্যালোচনা করে বোঝা যাবে। রাজ্য নেতৃত্ব কেন্দ্র নেতৃত্বের সঙ্গে বসে আলোচনা করবে, এখন আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ ঠিক তার আগেই এক্স হ্যান্ডলে দিলীপ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর একটি উক্তি পোস্ট করে আদি-নব্য কর্মীদের ‘গুরুত্বের’ বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। ওই পোস্টে অটলবিহারীর উক্তি হিসেবে লেখা ছিল, ‘আমার একটা কথা মাথায় রেখো, দলের পুরনো এক জন কর্মীকেও ভাঙতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে নতুন কার্যকর্তাদের ১০ জন আলাদা হয়ে যাক। কারণ, পুরনো কার্যকর্তারাই আমাদের বিজয়ের ‘গ্যারান্টি’। খুব দ্রুত নতুন কার্যকর্তাদের উপর ভরসা করা উচিত নয়।’ অটলের এই উক্তিকে ‘সময়োপযোগী’ বলেও দাবি করেন দিলীপ।

মঙ্গলবার সেই দিলীপ বললেন, ‘‘পার্টি (বিজেপি) দু’বার আমার ইচ্ছায় টিকিট দিয়েছে (২০১৬ সালে খড়্গপুর সদর বিধানসভা এবং ২০১৯ সালে মেদিনীপুর লোকসভা), আর এক বার ইচ্ছার বিরুদ্ধে টিকিট দিয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি কোনও দিন কারও কাছে ভোটে লড়ার জন্য টিকিট চাইনি। পার্টি বলেছে, ইলেকশন (ভোটে) লড়তে, আমি লড়েছি। আবার বললে লড়ব। আমি সাধারণ কর্মী। যত দিন রাজনীতি করার ইচ্ছা থাকবে করব। সারা জীবন তো কেউ রাজনীতি করে না।’’

উল্লেখ্য, বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে দিলীপ যেমন পরাজিত হন, তাঁর ‘আদি গড়’ মেদিনীপুরে পরাজিত হন অগ্নিমিত্রা পাল। যিনি শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-অভিমান প্রকাশ করেছিলেন দিলীপ। এখনও যে মন থেকে সেই ‘অভিমান’ মুছে যায়নি, তা দিলীপের কথাতেই পরিষ্কার।

খড়্গপুর (সদর) বিধানসভা আসনে হিরণের সঙ্গে তাঁর ‘লড়াই’ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন করায় দিলীপের জবাব, ‘‘হিরণ আমাদের সিটিং এমএলএ (বর্তমান বিধায়ক)। আর দল এ বার কাকে টিকিট দেবে, সেটা আমাদের পার্লামেন্টারি কমিটি ঠিক করে। ২৯৪টি আসনেই তা-ই হবে।’’ তিনি এ-ও জানান, সংগঠনের কাজ করতে বেশি পছন্দ করেন। এবং মেদিনীপুরে বিজেপির সংগঠন মজবুত বলে দাবি তাঁর।

অন্য দিকে, খড়্গপুর বিজেপির নতুন কার্যালয় খোলা এবং দিলীপ প্রসঙ্গে মেদিনীপুরে তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি সুজয় হাজরার কটাক্ষ, ‘‘মেদিনীপুরে আসতে ভয়, তাই খড়্গপুরে অফিস করছেন। সেটা নিয়ে মানুষের কোনও আগ্রহ নেই। আর বঙ্গ বিজেপি তো এখন শুভেন্দু অধিকারীর পকেটে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন