উপপ্রধান তুষারকান্তি মণ্ডল (মাঝে)। — নিজস্ব চিত্র।
এখনও মিটল না অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দ্ব। এসআইআর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বীরভূমের সাঁইথিয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে।
শুক্রবার বনগ্রাম পঞ্চায়েতের ভূতনাথ শ্মশানের সামনে এসআইআর নিয়ে একটি কর্মসূচি করার কথা ঘোষণা করেন অনুব্রত। কিন্তু ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যেই অসন্তোষ তৈরি হয়। পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান-সহ মোট ১২ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তিন জন পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য জানিয়েছেন, তাঁরা অনুব্রতের ডাকা কর্মসূচিতে যোগ দেবেন না। যোগ দেবেন না বুথ সভাপতিরাও।
উপপ্রধান তুষারকান্তি মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘কাজল শেখের অনুগামী হওয়ার কারণেই আমাদের এই সভায় ডাকা হয়নি।’’ ব্লক সভাপতিকে নিশানা করে তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ছাগল দিয়ে চাষ করা হচ্ছে, নিজের আখের গোছানোর জন্য।’’ ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’- প্রকল্পেও ‘চক্রান্ত’- এর অভিযোগ তুলেছেন উপপ্রধান।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর সিউড়ির কোমা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে এসআইআর সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কোমা অঞ্চল সভাপতি। অভিযোগ, ব্লক সভাপতি নুরুলের সঙ্গীরা বলরাম এবং তাঁর ভাইকে বেধড়ক মারধর করেন। এর পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান শতাব্দী। বিষয়টি কানে যেতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিতে। মঙ্গলবার জেলা পরিষদে বলরাম-নুরুল পক্ষের দাবি ছিল, কোনও গন্ডগোল ছিল না। কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তা মিটে গিয়েছে। তবে গত বুধবার ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছিল সিউড়ি-২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েতের জানুরি গ্রামে। স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদি শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামের অনুগামীরা হামলা চালিয়েছেন বলরামের অনুগামীদের উপর। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন দু’জন। বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। আক্রান্তদের দাবি, শুধুমাত্র বলরামের ঘনিষ্ঠ বলেই আক্রমণ করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, বলরাম পরিচিত অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ হিসাবে। কাজলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত নুরুল।
এসআইআর নিয়ে সিউড়ির কোমা অঞ্চলে সূত্রপাত হওয়া সেই দ্বন্দ্বের রেশ এখনও কাটেনি ফের বিবাদ প্রকাশ্যে এল বনগ্রামের এসআইআর কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে।