Bangladesh Unrest

‘ভাঙচুর, লুট, হামলা’! ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করল ছায়ানট, সাড়ে তিনশো জন অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে মামলা

ছায়ানটের তরফে বিবৃতি দিনে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে একদল লোক জোর করে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ছ’তলা ভবনে প্রবেশ করে। তার পরেই তারা ভাঙচুর শুরু করে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪৬
গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙচুরের পরে ছায়ানট।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙচুরের পরে ছায়ানট। ছবি: রয়টার্স।

ছায়ানট সাংস্কৃতিক ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় ঢাকার ধানমন্ডি থানায় মামলা রুজু হল। পুলিশ জানিয়েছে, ছায়ানটের ম্যানেজার দুলাল ঘোষ শনিবার ৩০০ থেকে ৩৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন।

Advertisement

ধানমন্ডি থানার ওসি সইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভাঙচুর, লুট, অস্ত্র-সহ হামলার চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। ছায়ানটের তরফে বিবৃতি দিনে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে একদল লোক জোর করে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ছ’তলা ভবনে প্রবেশ করে। তার পরেই তারা ভাঙচুর শুরু করে। ভবনের একাংশে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। সেখানে যত সিসি ক্যামেরা ছিল, সব ভাঙা হয়েছে। সব অডিটোরিয়াম, ঘর লন্ডভন্ড করা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছে ছায়নট। সেখানে সই রয়েছে সভাপতি সারোয়ার আলি এবং সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসার।

ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো, ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল (আনন্দবাজার ডট কম তার সত্যতা যাচাই করেনি)। তাতে দেখা গিয়েছিল, ছায়ানটে প্রবেশ করে হারমোনিয়াম, তবলা আছড়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে আসবাব। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ লুট করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।

বাংলাদেশ যখন পূর্ব পাকিস্তান, তখন ছায়ানট তৈরি হয়। তাদের নববর্ষ উৎসব ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু গত বছরের ৫ অগস্টের পালাবদলের পর থেকেই কয়েকটি কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বাংলা নববর্ষ উৎসব উদ্‌যাপনের বিরোধিতা করেছে প্রকাশ্যে। এই আবহে বৃহস্পতিবার রাতে ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে ছায়ানটে। অভিযোগ, কট্টর ইসলামপন্থী স্লোগান দিতে দিতে সংগঠিত ভাবে মিছিল করে গিয়ে সেখানে হামলা চালানো হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি-বই। ভেঙে ফেলা হয় অসংখ্য বাদ্যযন্ত্রও। বিক্ষোভকারীরা ছিঁড়ে দেয় ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সনজীদা খাতুনের ছবি। রেহাই পায়নি লালন, এমনকি বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের ছবিও।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী হামলার পরের দিন ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, “এই জাতীয় শোকের মুহূর্তে এক শ্রেণির হঠকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’-এ হামলা চালিয়ে ক্ষয়ক্ষতি করেছে। মৃত্যুঞ্জয়ী হাদির মৃত্যুতে কোনও সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা কেবল একটি ফৌজদারি অপরাধই নয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনারও পরিপন্থী।”

ছায়ানটের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ‘‘ছায়ানটের কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি নয়, সংগীত–সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে ছায়ানট। ছায়ানট সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়তে প্রয়াসী।’’ এ বার তারা থানায় মামলা রুজু করল।

Advertisement
আরও পড়ুন