৯/১১ হামলার মূল চক্রী আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে যে জঙ্গি হামলা হয়েছিল, তার মূল চক্রী ছিলেন আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। ৯/১১ হামলার পর তাঁর খোঁজে সারা বিশ্বে চিরুনিতল্লাশি করেছিল আমেরিকার সেনাবাহিনী। আফগানিস্তানের টোরা বোরায় লাদেনকে হাতের মুঠোয় পেয়েও তারা তাঁকে ধরতে ব্যর্থ হয়। মহিলার ছদ্মবেশে মার্কিন সেনাকে বোকা বানিয়ে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন আল কায়েদা প্রধান। সেখানে ছিলেন ২০১১ সাল পর্যন্ত। আফগানিস্তানের রুদ্ধশ্বাস সেই অভিযানের কথা ফাঁস করলেন গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)-র প্রাক্তন কর্তা জন কিরিয়াকু। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে একটি সাক্ষাৎকারে লাদেনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
কিরিয়াকু ১৫ বছর ধরে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাকিস্তানে সিআইএ-র সন্ত্রাসদমন শাখার প্রধান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর দাবি, মার্কিন বাহিনীর ভিতরে লাদেনের এক সহকারী ঢুকে পড়েছিলেন। সুকৌশলে তিনি জঙ্গিদের হয়ে কাজ করছিলেন। ছিলেন আল কায়েদার সক্রিয় সদস্য। তাঁর বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই সে বার মার্কিন বাহিনীর অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল, দাবি প্রাক্তন সিআইএ কর্তার।
কিরিয়াকুর দাবি অনুযায়ী, সেন্ট্রাল কমান্ডের অনুবাদক হিসাবে যিনি ছিলেন, তিনিই আল কায়েদার হয়ে কাজ করছিলেন। তাঁকে বিশ্বাস করে মার্কিন সেনাকে ঠকতে হয়েছে। কী ভাবে? প্রাক্তন সিআইএ কর্তার কথায়, ‘‘অনুবাদক যে আসলে আল কায়েদার সদস্য, আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে ঢুকে পড়েছে, আমরা সেটা জানতাম না। আমরা তো নিশ্চিত ছিলাম যে, লাদেনকে ধরে ফেলেছি। ওঁকে বলা হয়েছিল, পাহাড় থেকে চুপচাপ নেমে আসতে। কিন্তু অনুবাদকের মাধ্যমে লাদেন ভোর পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে বলেন। মহিলা এবং শিশুদের নিরাপদে বার করে দিয়ে উনি আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানান। আমাদের জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক্সকে এই পরিকল্পনায় রাজি করান অনুবাদক।’’ রাতে মহিলা ও শিশুদের বেরিয়ে যেতে দেওয়া হয়। কিন্তু ভোরে টোরা বোরার পাহাড়ি গুহায় পৌঁছে আমেরিকার সেনাবাহিনী দেখে, সেখানে আর কেউ নেই। সকলেই পলাতক।
রাতের অন্ধকারে মহিলার ছদ্মবেশে একটি ট্রাকের পিছনে চেপে আফগানিস্তান ছেড়েছিলেন লাদেন, দাবি কিরিয়াকুর। অনুবাদকের বিশ্বাসঘাতকতার কথা যত ক্ষণে জানা গিয়েছিল, তত ক্ষণে সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গিরা পাকিস্তানে প্রবেশ করে ফেলে। আর তাদের নাগাল পাওয়া যায়নি। ১০ বছর পরে ২০১১ সালে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অ্যাবটাবাদে অভিযান চালিয়ে লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন সেনা।