Iran-Israel Conflict

পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে এখনও তিন বছর লাগবে ইরানের, মনে করছেন মার্কিন গোয়েন্দারা! ইজ়রায়েল বলেছিল অন্য কথা

পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার প্রাক্তন কূটনীতিক ব্রেট ম্যাকগার্ক সিএনএন-কে জানিয়েছেন, আমেরিকার সাহায্য ছাড়া, অস্ত্র ছাড়া ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই ইজ়রায়েলের।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫ ১৮:৫৭
ইজ়রায়েলের হামলা ইরানে।

ইজ়রায়েলের হামলা ইরানে। — ফাইল চিত্র।

ইজ়রায়েল বার বার দাবি করেছে, পরমাণু অস্ত্র প্রায় তৈরি করার মুখে ইরান। সে কারণেই ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে গত শুক্রবার হামলা চালিয়েছিল তারা। অন্য দিকে, আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট বলছে অন্য কথা। মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, প্রস্তুতি শুরু করলেও ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে মোটের উপর আরও তিন বছর দেরি। বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

সিএনএন জানিয়েছে, আমেরিকার গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, লক্ষ্যবস্তুতে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে হানা দেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে তিন বছর সময় লাগবে ইরানের। আমেরিকার গোয়েন্দারা মনে করছেন, ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে ইজ়রায়েলের হামলার ফলে তাদের গবেষণার কাজ কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে পারে। এর থেকে বেশি ইরানের কাজে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আমেরিকার গোয়েন্দাদের দাবি, নাতানজ়ে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে ইজ়রায়েল। কিন্তু, ফরদোতে যে কেন্দ্র রয়েছে, তাতে আঁচড় কাটতে পারেনি বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা। মার্কিন প্রাক্তন কূটনীতিক ব্রেট ম্যাকগার্ক সিএনএন-কে জানিয়েছেন, আমেরিকার সাহায্য তথা অস্ত্র ছাড়া ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই ইজ়রায়েলের।

যদিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ইরানে ইজ়রায়েল যে হানা চালাচ্ছে, তাতে জড়াতে চায় না আমেরিকার বাহিনী। রবিবার সকালে এবিসি নিউজ়কে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা এর মধ্যে নেই। হতে পারে, আমরা জড়িয়ে পড়তে পারি। তবে এই মুহূর্তে আমরা এই অভিযানে জড়িত নই।’’ সোমবার কানাডায় জি৭ বৈঠক থেকে ইজ়রায়েল এবং ইরানকে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলার আর্জিও জানান ট্রাম্প।

ট্রাম্প প্রশাসনের গোয়েন্দা অধিকর্তা তুলসি গাবার্ড গত মার্চে জানিয়েছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। তুলসির এই রিপোর্টের সঙ্গে কেন একমত নন নেতানিয়াহু, তা তিনি সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গোয়েন্দা সূত্রে যে তথ্য পেয়েছি, তা আমেরিকাকেও জানিয়েছি। সেই তথ্য থেকে স্পষ্ট যে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। গোপনে ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা বৃদ্ধি করে এই কাজ করছে। খুব শীঘ্র করেও ফেলবে।’’

রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) গত সপ্তাহে দাবি করেছিল, ইরানের কাছে যথেষ্ট ইউরেনিয়াম রয়েছে, এতটাই যে, তা থেকে তারা ন’টি পরমাণু বোমা বানাতে পারে। তারা বিষয়টিকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেও বর্ণনা করে। ইজ়রায়েলের হানায় ইরানের পরমাণুকেন্দ্রের কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখছে তারা। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, ইজ়রায়েলের হামলার কারণে ইরান এখন তড়িঘড়ি পরমাণু অস্ত্র বানিয়ে ফেলতে পারে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, এই হামলায় ইরান ‘ধাক্কা’ খেয়েছে। তাঁদের আর অস্ত্র তৈরির ক্ষমতা রয়েছে কি না, তা-ও নিশ্চিত নয়।

Advertisement
আরও পড়ুন