Transgender Protest at London

পুরুষ থেকে রূপান্তরিত হলে ‘নারী’ বলে স্বীকৃতি নয়! ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লন্ডনের রাস্তায় মানুষের ঢল

ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের হাজার হাজার রূপান্তরিত বা তাঁদের অধিকারের সমর্থনকারী মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছেন। শনিবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়্যারে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০৮
Protest in London by Transgender rights protectors against ruling of UK Supreme Court

লন্ডনের রাস্তায় প্রতিবাদীদের জমায়েত। ছবি: রয়টার্স।

যাঁরা শারীরিক ভাবে মেয়ে হয়ে জন্মেছেন, তাঁদেরই ‘মহিলা’ বলা যাবে। রূপান্তরিত মহিলাদের ‘মহিলা’ বলা যাবে না। গত বুধবার একটি মামলায় এমনটাই রায় দিয়েছে ব্রিটেনের সু্প্রিম কোর্ট। যার পর থেকে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। অভিযোগ, এ ভাবে তাঁদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। সেই অসন্তোষই শনিবার (স্থানীয় সময়) বিক্ষোভের আকারে ফেটে পড়ল লন্ডনের রাস্তায়। পার্লামেন্ট স্কোয়্যারের কাছে জড়ো হলেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের অধিকাংশ রূপান্তরিত অথবা রূপান্তরকামী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের হাজার হাজার রূপান্তরিত বা তাঁদের অধিকারের সমর্থনকারী মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছেন। শনিবার লন্ডনের জমায়েতকে তাঁরা ‘জরুরিকালীন বিক্ষোভ প্রদর্শন’ বলে উল্লেখ করেছেন। অনেকের হাতে তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত করার দাবিতে এবং তাঁদের স্বাধীনতার দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড এবং রামধনু রঙের পতাকা দেখা গিয়েছে। স্লোগানে স্লোগানে ছেয়ে গিয়েছে পার্লামেন্ট স্কোয়ার।

বুধবারের রায়ে রূপান্তরিতদের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ মানতে চায়নি ব্রিটেনের সর্বোচ্চ আদালত। তারা জানিয়েছে, রূপান্তরিত এবং রূপান্তরকামীদের অধিকার সুরক্ষিতই থাকবে। এই রায়ের পর বৈষম্যের হাত থেকে তাঁরা রক্ষা পাবেন। ব্রিটেনের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অর্থ হল, এ বার থেকে মহিলাদের শৌচাগার, হাসপাতালের ওয়ার্ড কিংবা খেলার দল থেকে রূপান্তরিত মহিলাদের আলাদা করা হবে। পার্লামেন্ট স্কোয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে ১৯ বছরের রূপান্তরিত তরুণী সোফি গিব্‌স বলেন, ‘‘আপনার অধিকার আপনার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটা একটা ভয়ানক সময়। আমরা তথাকথিত উন্নত সমাজে বাস করতাম। কিন্তু সেই সমাজই এখন এমন ভয়ঙ্কর, ক্ষতিকর রায় শোনাচ্ছে।’’

ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেয়। সরকারের বক্তব্য, রায়ের ফলে পরিষেবাদানকারীদের কাজে স্বচ্ছতা আসবে, মহিলারা আত্মবিশ্বাস পাবেন।

পরিসংখ্যান বলছে, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের মোট জনসংখ্যা সাড়ে ছ’কোটির কিছু বেশি। তাঁদের মধ্যে ১ কোটি ১৬ লক্ষ মানুষ রূপান্তরিত বা রূপান্তরকামী। এখনও পর্যন্ত সাড়ে আট হাজারের বেশি লিঙ্গ পরিবর্তনের শংসাপত্র দিয়েছে সরকার।

ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কারও লিঙ্গ কী, তা ব্যাখ্যা করার জন্য শংসাপত্র ব্যবহার করা হলে পুরুষ এবং মহিলার সংজ্ঞার সঙ্গে তার বিরোধ ঘটতে পারে। ২০১০ সালের সমতা আইনে যে বৈষম্যবিরোধী বিধানগুলি দেওয়া হয়েছে, তা কেবল জৈবিক লিঙ্গের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই রায় তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের অধিকার খর্ব করার পথ দেখাল। আগামী দিনে এমন আরও রায় দেওয়া হবে এই রায়ের উদাহরণকে সামনে রেখে।

Advertisement
আরও পড়ুন