ভ্লাদিমির পুতিন। —ফাইল চিত্র।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা প্রসঙ্গে দায় এড়ানোর বার্তা দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘বল এখন সম্পূর্ণ ভাবে কিভ এবং তাদের ইউরোপীয় পৃষ্ঠপোষকদের কোর্টে।’’ রুশ সংবাদমাধ্যমকে এর পরেই পুতিন বলেন, ‘‘আমি মনে করি, মস্কোর সাম্প্রতিক অগ্রগতি বিবেচনায় কিভকে সমঝোতায় বসতে বাধ্য করা উচিত।’’
শুক্রবার মস্কোয় সাংবাদিক বৈঠকে ‘ইউক্রেনের পৃষ্ঠপোষক’ ইউরোপীয় রাষ্ট্রনেতাদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে পুতিন বলেন, ‘‘ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পশ্চিমি শক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছে। আমরা পশ্চিমিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। কিন্তু সম্পত্তি ফ্রিজ (বাজেয়াপ্ত করা), রুশ সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেন পুনর্গঠন ও প্রতিরক্ষা খাতে অর্থ জোগানোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে তার গুরুতর পরিণাম ভোগ করতে হবে।’’
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের বৈঠকে বাজেয়াপ্ত করা রুশ সম্পদ ব্যবহারের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়নি। বিকল্প হিসেবে ইউক্রেনকে যৌথ ঋণ সহায়তা হিসেবে ৯০০০ কোটি ইউরো (প্রায় সাড়ে ন’লক্ষ কোটি টাকা) দেওয়ার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। তার পরেই এই বিবৃতি দিলেন পুতিন। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় সুর নরম করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বলেছিলেন, ‘‘ইউক্রেনের পক্ষ থেকে নতুন শান্তি প্রস্তাব তৈরির কাজ চলছে। দ্রুত তা মস্কোর কাছে পৌঁছোবে।’’ যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে কিভ যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাবে সায় দিয়ে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোতে যোগদানের প্রচেষ্টা বন্ধ করবে, সে বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু শুধুমাত্র তাতে মস্কো যে সন্তুষ্ট হবে না, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন পুতিন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অগ্রগতি অব্যাহত। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই মস্কো আরও এলাকা দখলে নেবে।’’ পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের মতে, পুতিনের ‘নজর’ রয়েছে ২০১৪ সালে ছিনিয়ে নেওয়া ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ক্রাইমিয়া এবং ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের অন্যতম ভরকেন্দ্র ডেনেৎস্ক-ওল্ডবাস্ট এবং লুহানস্ক অঞ্চল (যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়)। ডনবাসের প্রায় ৭০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে রাশিয়ার দখলে। গত পাঁচ মাসে ওই এলাকায় নির্ণায়ক অগ্রগতি হয়েছে রুশ বাহিনীর। এ বার ওই এলাকারে পাকাপাকি ভাবে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করতে চান পুতিন।