Rishi Kaushik

কলকাতার বিরিয়ানি আমার সবচেয়ে প্রিয়, একবার খেলে ভোলা সম্ভব নয়

কী ভাবে জীবনকে দেখতে হয় তার পাঠও আমাকে কলকাতাই দিয়েছে।

Advertisement

ঋষি কৌশিক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:২০
Share:

‘আমি এখনও কলকাতার অনেক রাস্তা দিয়ে গেলে ইমোশনাল হয়ে যাই’

আমি বিশ্বাস করি মানুষ দুটো জীবন পায়। একটা জন্ম জীবন, একটা কর্ম জীবন। অসমে আমি জন্ম জীবন পেয়েছি। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আমি কর্ম জীবন পেয়েছি। যেজন্য আমি কলকাতার কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। কারণ আমায় পরিচিতি দিয়েছে কলকাতাই। কাজ করা শুরু করলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির বদল ঘটে। অ্যামেচার থেকে, স্টুডেন্ট লাইফ থেকে যখন সে নিজে রোজগার করতে শেখে, নিজের একটা পরিচয় তৈরি করে। এসবই আমাকে কলকাতা দিয়েছে। কী ভাবে জীবনকে দেখতে হয় তার পাঠও আমাকে কলকাতাই দিয়েছে।

Advertisement

আমি ২০০২ সালে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতায় আসি। অভিনেতা হব বলেই এসেছিলাম। তবে প্রথম দিকে কিছু মডেলিংও করি। মডেলিং-এ সাফল্য পাইনি। যদিও আমি জানতাম মডেলিং আমার লক্ষ্য নয়। আমি অভিনেতা হতেই চেয়েছিলাম। সেভাবেই এগোই। ভাগ্য ভাল, ঠিকঠাক একটা সুযোগও পাই। তারপর অভিনয় নিয়েই এগিয়েছি।

তবে কলকাতার সব কিছুই ভাল লাগে, তা নয়। হই হট্টগোল ভাল লাগে না। অযথা হল্লা ভাল লাগে না। বড়দিনের সময় পার্ক স্ট্রিটের ভিড় ভাল লাগে না। থার্টি ফার্স্ট-এ ডিজে নাইট যেগুলো অ্যাড দেখায় সেগুলোই ভাল লাগে না, যাওয়া তো দূরের ব্যাপার। ফেস্টিভ মুড ভাল। কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল বা একটা পর্যায়ের পরে হইচই আমার ভাল লাগে না।আমি শান্ত পরিবেশ পছন্দ করি। আমি আমার মতো করেই থাকি। কলকাতা তো শুধু ওই জায়গা টুকুই নয়, আরও অনেক জায়গা আছে। সে সব জায়গায় নিজের মতো করে থাকা যায়। নিজের বাড়িতে থাকা যায়, বন্ধুর বাড়িতে থাকা যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: কলকাতা, ভেবে দেখো যাবে কি না আমার সাথে

‘কলকাতার হই হট্টগোল একেবারেই ভাল লাগে না’

আমি এখনও কলকাতার অনেক রাস্তা দিয়ে গেলে ইমোশনাল হয়ে যাই। যখন প্রথম এখানে এসে স্ট্রাগল করছিলাম তখন ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার মাইন্ড সেট কেমন ছিল, তখন কী ভাবতাম সেটা ভাবলে এখনও অনেক সময় চোখে জল চলে আসে। তখন এই শহরের প্রতি আমি আরও কৃতজ্ঞ হয়ে যাই।

আরও পড়ুন: কলকাতার রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমার প্রথম কবিতা লেখা

আমি সব কিছুই খেতে খুব ভালবাসি, যে কোনও ভাল খাবার। তবে সত্যি বলতে আইসক্রিম, চকোলেট আর ফুচকার প্রতি বিশেষ কোনও টান নেই। লোকেরা কলকাতা মানেই ফুচকা বোঝে। ওরিয়েন্টাল ডিশ ভাল লাগে। কিন্তু অথেনটিক কিছু চাইনিজ ডিশ আমার খুব ভাল লাগে। কলকাতা ইজ ফুড হাব। কলকাতার বিরিয়ানি ইজ মাই অল টাইম ফেভারিট। কলকাতায় যে একবার বিরিয়ানি খেয়েছে অন্য শহরের বিরিয়ানি তার আর ভাল লাগবে না। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কোথাও বেড়াতে গিয়েআমি এটাও দেখেছি, কোনও বন্ধু অন্য জায়গার বিরিয়ানি অর্ডার করছে। আমি বার বার বলেছি, “নিস না, নিস না। কী রকম হবে জানিস না।” নিয়ে পস্তেছে। তখন বন্ধুদের বলেছি, “তুমি অন্য জায়গার বিরিয়ানি খাচ্ছ খাও। কিন্তু বিরিয়ানির কলকাতার কনসেপ্ট মাথা থেকে বার করে নতুন জিনিস খাচ্ছ বলে খাও। তা হলে এতটা খারাপ লাগবে না।” কলকাতার ফুটপাথে বিক্রি হওয়া বিরিয়ানিরও একটা মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড আছে। কলকাতার বিরিয়ানি যে একবার জিভে স্পর্শ করেছে সে অন্য বিরিয়ানি খেয়ে খুশি হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন