রান্না-খাওয়ার সঙ্গে বাসনের সম্পর্ক যে অবিচ্ছেদ্য
কলকাতা শহরে খাদ্যরসিকদের বাস। বাঙালি খেতে এবং খাওয়াতে দুইই ভালবাসে। এবং রান্না-খাওয়ার সঙ্গে বাসনের সম্পর্ক যে অবিচ্ছেদ্য। ষ্টিলের, কাঁসার, তামার, কাঠের, সেরামিক বা চিনামাটির- এই বিভিন্ন ধরনের বাসনই কলকাতায় মিলবে অল্প ব্যয়েই। ফলে নিজের পরিবারের জন্য রান্নাবান্না হোক কিংবা অভ্যাগতদের আপ্যায়ন — আপনাকে হন্যে হয়ে নামী সংস্থার দামি বাসনপত্র কিনতে হবে না একেবারেই। বরং তার বদলে কলকাতা শহরের রাস্তাঘাটে একটু নজর রাখলেই পাবেন মুশকিল আসান।
১। রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে ফুটপাথ ধরে হাঁটলে কাঠের জিনিসপত্র বিক্রির স্টলে আপনি পাবেন পছন্দসই কাঠের বাসনপত্র। অল্প দামেই এখানে বিভিন্ন কাঠের বাসন কিনতে অনেক জায়গা থেকেই নিয়মিত আসেন বিভিন্ন মানুষ। দোকানের বিক্রেতাও বেশ সময় নিয়ে ক্রেতাদের বাসনপত্র দেখিয়ে দেন। বিভিন্ন প্রয়োজনে কাঠের বাসন ইদানীং কলকাতার মানুষের প্রয়োজন হয়। এইখানে সেই প্রয়োজন মিটে যেতে পারে।
আকর্ষণীয় এই সব বাসনই কিন্তু অত্যন্ত ভঙ্গুর।
২। গড়িয়াহাটের মোড়ের একদিকের ফুটপাথ ধরে হাঁটলে প্লেট, কাপ, গ্লাস, বাটি, জগ এবং আরও অনেক কিছু আপনার চোখে পড়বে যা সেরামিক বা চিনে মাটির তৈরি। আকর্ষণীয় এই সব বাসনই কিন্তু অত্যন্ত ভঙ্গুর। ফলে যদি কিনতে হয় তবে খুব সাবধানে প্যাক করে না নিলে বাড়ি পৌঁছে আস্ত বাসন আর না-ও পেতে পারেন। কিন্তু বিভিন্ন ডিজাইনের এই সব বাসন আপনার খাবার টেবিল বা রান্নাঘরকে দিতে পারে এক নান্দনিক চেহারা।
৩। তামচিনি হল এনামেলের পাত্রের হিন্দি শব্দ যা পুরোনো দিনে বেশ জনপ্রিয় ছিল। লোহা বা টিনের তৈরি এই বাসনগুলিকে তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য সাদা এনামেল দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়। প্লেট, বাটি, মগ এবং থালা-বাসন, তামচিনি অন্তত এক যুগ আগে বেশিরভাগ বাড়িতেই সহজলভ্য ছিল। এখনও একটু চেষ্টা করলে সুন্দর তামার বাসন বা তামচিনি আপনি পেতে পারেন বড় বাজারের ভেতর বিভিন্ন অখ্যাত দোকানে। নামী সংস্থার সুবিধা না থাকলেও একটু দেখে কিনলে টেঁকসই বাসন পেতে অসুবিধা হবে না।
৪। পুরনো নিউ মার্কেটের ভেতরে বাসনের যে দোকানগুলি রয়েছে সেখানে ভালো গুণমানের ষ্টিলের বাসন কিনতে আপনি হানা দিতেই পারেন। থালা, বাটি, গ্লাস, হাতা, খুন্তি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ষ্টিলের বাসন এইখানে আপনি পাবেন অল্প দামেই। তবে দরাদরি করতে পারলে হবে উপরি সুবিধাও। এই সমস্ত দোকানে উৎসব অনুষ্ঠানের মরসুমে ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো।