Inspirational Story

সহকর্মী থেকে শিক্ষার্থী, সেন্ট ফ্রান্সিসের কর্মজীবন বদলে দিয়েছে শিল্পাকে

সেন্ট ফ্রান্সিস অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় শিল্পা। তিনি যেমন রোজ হাতে ধরে তাদের পড়ান, ঠিক তেমনই রোজ তাদের থেকেও কিছু না কিছু শেখেন। শিল্পা নিজেও এক জন মা। সন্তানের বয়স ৩ বছর।

সংগৃহীত প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৪৮
Share:

শিল্পা চক্রবর্তী

যে কোনও প্রজন্মের উত্তরণের যাত্রায় বিশেষ ভাবে যুক্ত থাকেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে আগামীকে তৈরি করেন। সাজিয়ে দেন ভবিষ্যতের রূপরেখা। শিল্পা চক্রবর্তী তেমনই এক জন। বর্তমানে তিনি সেন্ট ফ্রান্সিস অ্যাকাডেমির জুনিয়র বিভাগের শিক্ষিকা।

ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, স্কুলে পড়াবেন। পথ দেখাবেন শিক্ষার্থীদের। সেই স্বপ্নকেই এখন সত্যি করে তুলছেন শিল্পা। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষকের ভূমিকা একটু অন্য রকম। শুধু শিক্ষাদানই নয়, এক জন শিক্ষক নবীন জীবনকে সম্পূর্ণ রূপে প্রভাবিত করতে পারেন। শিক্ষার্থীদের জীবনে পথ দেখান। তাই স্কুলে হোক বা সাধারণ জীবনে, শিল্পা শুধু শিক্ষকই নন, প্রশিক্ষক, পরামর্শদাতা এবং বন্ধুও বটে! দীর্ঘ দিন ধরেই শিক্ষকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত শিল্পা। তিনি নিজেও স্বীকার করে নিলেন, এক জন গৃহশিক্ষক, প্রশিক্ষক, পরামর্শদাতা এবং শিক্ষাবিদ হিসাবে অভিজ্ঞতাই তাঁর শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

সেন্ট ফ্রান্সিস অ্যাকাডেমির শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় শিল্পা। তিনি যেমন রোজ হাতে ধরে তাদের পড়ান, ঠিক তেমনই রোজ তাদের থেকেও কিছু না কিছু শেখেন। শিল্পা নিজেও এক জন মা। সন্তানের বয়স ৩ বছর। তাঁর মতে, “এক জন মা হিসেবে সন্তানকে বড় করার জন্য আমি প্রতিদিন যে সংগ্রাম ও কষ্টের মুখোমুখি হই, তা সত্যিই খুব চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমি যখন সেন্ট ফ্রান্সিস অ্যাকাডেমিতে কাজ শুরু করেছি, তখন থেকে এক জন মা হিসেবে আমার জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করা অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে। কারণ আমার স্কুল আমাকে প্রতিদিন ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং শৃঙ্খলার মূল্য শিখতে সাহায্য করেছে। যা আমার জীবনের মানেই বদলে দিয়েছে।”

শিল্পার জীবনে চলার পথে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন সহকর্মী, স্কুলের ফাদার থেকে শুরু করে প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা। স্কুলের অধ্যক্ষ অর্থাৎ ফাদারের প্রতি বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ তিনি। শিল্পা বলেন, “এত দিন যা শিখেছি, তার সবটুকুই সম্ভব হয়েছে ফাদারর কারণে। তিনি যদি আমাকে এখানে কাজ করার সুযোগ না দিতেন, তা হলে কিছুই অর্জন করতে পারতাম না। বিদ্যালয়ের ভাল পরিবেশ আমাদের কাজের পরিবেশকে আরও মসৃণ এবং অনুকূল করে তুলেছে। আমরা আমাদের অধ্যক্ষের কাছে যে কোনও সমস্যা নিয়ে যেতে পারি। তিনি আমাদের সকলের কথা শোনেন এবং সমাধানের পথ দেখান।”

কোনও প্রতিষ্ঠানের ভাল পরিবেশের মূল ভিত্তি সহকর্মীরা। কাজের ফাঁকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা, সব কিছু ভাগ করে নেওয়া— এর সবটাই সম্ভব হয়েছে সেন্ট ফ্রান্সিসে। শিল্পা বলেন, “আমরা সবাই একটি দল হিসাবে কাজ করি। প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশে দাঁড়াই। ওঁরা না থাকলে আমার কর্মজীবন অসম্পূর্ণ থেকে যেত।”

আর পড়ুয়ারা কেমন? শিল্পা বলেন, “একটি বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া অসম্পূর্ণ। ওরা আসলে ফুলের মতো। তাদের যেমন গড়া হবে, সে ভাবেই বেড়ে উঠবে। আমরা স্কুলে শিশুদেরকে শৃঙ্খলা, লক্ষ্য নির্ধারণ, সময় ব্যবস্থাপনা এবং সমস্যা সমাধানের মতো জীবনের প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলি শেখানোর মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করি।”

আরও অপরাজিতাদের গল্প জানতে ক্লিক করুন —অপরাজিতা ২০২৩

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন