Durga Puja 2021

Durga Puja 2021: ম্যাডক্স স্কোয়ারে ফুচকা খাচ্ছি, হঠাৎ ছোট্ট মেয়ের চিৎকার, ওই দ্যাখো দুর্গা: সন্দীপ্তা

টাকা বাড়িয়ে দিয়ে আজব অনুরোধ, ‘একটা অটোগ্রাফ দেবেন?’

Advertisement

সন্দীপ্তা সেন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৫২
Share:

সন্দীপ্তা সেন।

জানেন, বড় হয়ে গিয়েছি। এখন আমার পুজো মানে শহুরে কোলাহল ছাড়িয়ে কোথাও দূরে... আরও দূরে। বাড়ির পাশে তারস্বরে বাজতে থাকা গান বিচ্ছিরি লাগে। প্রচুর ভিড়। তার থেকে নিরিবিলিতে ছুটি কাটাও নিজের মতো করে। সারা বছর ছুটিই তো মেলে না। তাই পুজোর চারটে দিন আমি খোলা আকাশ খুঁজি। যেখানে নিজের মতো করে ডানা মেলতে পারব। গত বছর অতিমারিতে বেরোতে পারিনি। বন্ধুদের বাড়িতে বাড়িতে আড্ডা দিয়ে কেটে গিয়েছে। এ বছর বেরিয়ে পড়ার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক।

Advertisement


চড়তে চড়তে রাইডস ফ্রি...!!

অথচ ছোটবেলা কী ভীষণ অন্য রকম ছিল। পুজোর নতুন জামার গন্ধ ছিল। চারটে দিন ছুটি ছিল। আমি বড় হয়েছি ভবানীপুরে। বাড়ির পাশে ভবানীপুর হরিশ পার্ক। সেখানে মায়ের মুখ দেখা, অঞ্জলি দেওয়া তো ছিলই এক দিকে। আর ছিল বিভিন্ন রকমের রাইডস চড়া। সে সব রোজ গিয়ে চড়তাম। এত চড়তাম যে, শেষে আমাদের ওগুলো ফ্রি করে দেওয়া হত। সেই রাইডসগুলো কোথায় গেল?

Advertisement


ছোটবেলায় অনেক বাড়িতে প্রচুর আত্মীয়ের হইচই। আমাদের বাড়িতে তারও অভাব। এক জন মাত্র তুতো দিদি আর আমি। আমরাই দু’জনে মিলে হইহল্লা করতাম। পাড়ার বন্ধুরা সঙ্গে থাকত। আস্তে আস্তে সেই সংখ্যা বাড়ল। স্কুল গিয়ে কলেজ এল। পড়তে যাওয়ার বন্ধুরা যোগ দিল। একটু একটু করে পুজোও ভোল বদলাতে লাগল।

তখন আমি ‘দুর্গা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছি।

টাকা বাড়িয়ে দিয়ে আজব অনুরোধ, একটা অটোগ্রাফ দেবেন?

দক্ষিণ কলকাতার মেয়ে হয়ে ম্যাডক্স স্কোয়ারে যাব না, এটা হতে পারে? কলেজে পড়ার সময় কত পুজোর রাত কাটিয়েছি ম্যাডক্স স্কোয়ারে। ওখানেই ভারী মজার অভিজ্ঞতা আছে। তখন আমি ‘দুর্গা’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। ম্যাডক্স স্কোয়ারে দাঁড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছি। একটি ছোট্ট মেয়ে প্রতিমার দিকে পিছন করে দাঁড়িয়ে। ওর নজর আমার দিকে। হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল, ‘‘মা দ্যাখো দুর্গা!’’ ওর মা ওকে বোঝাচ্ছেন, পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে কোথায় ঠাকুর দেখছ! সামনে তো মা দুর্গা দাঁড়িয়ে। কী সুন্দর সাজিয়েছে দ্যাখো। আমিও পায়ে পায়ে মণ্ডপে এসে দাঁড়িয়েছি। মেয়েটি তখনও তার মাকে আমায় দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছে। হঠাৎ আমার দিকে চোখ পড়তেই বাচ্চাটির মা স্তম্ভিত। আমি বুঝলাম, লোকে চিনতে পারছে। আর থাকা চলবে না। আস্তে আস্তে চারপাশে লোক জমতে আরম্ভ করল। তখনও নিজস্বী তোলার হিড়িক ছিল না। সবাই পাগলের মতো অটোগ্রাফ চাইছে! তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছি, এক জন পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করলেন। তার থেকে টাকার নোট বের করে এগিয়ে দিয়ে আজব অনুরোধ তাঁর, ‘‘একটা অটোগ্রাফ দেবেন?’’ আমি যেন পালাতে পারলে বাঁচি!

যা আমায় মানায়, সেটাই আমার সাজ।

আমি বড্ড মেছো...

মাছ ছাড়া ভাত রোচে না মুখে! বিশুদ্ধ বাঙালি খানা পুজোর চারটে দিন। যেমন, সকালে লুচি, বেগুন ভাজা বা ছোলার ডাল। দুপুরে ভাতের পাতে মাটন। চিকেন আমি খাই না। আর মাছ মাস্ট। সেটা ভেটকির পাতুরি হতে পারে। কিংবা চিংড়ি বা সর্ষে ইলিশ আমার চাইই।

হঠাৎ চোখের পাতায় বেগনি আইশ্যাডো দিয়ে বেরোতে পারব না

যা পরে আরাম লাগে, সে রকমই কিছু পোশাক কেনাকাটা করেছি। এ বছর সাদা জমিনে হ্যান্ড প্রিন্টেড শাড়ি কিনেছি পুজো উপলক্ষে। আর ড্রেস, কুর্তি, সালোয়ার মিলিয়ে বেশ কিছু কেনাকাটা হয়ে গিয়েছে। যেগুলো পরে দিব্য পুজো কেটে যাবে। বাকি রইল সাজ। সাজ-পোশাক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার বাতিক আমার একেবারেই নেই। পুজো বলে হঠাৎ এক দিন চোখের পাতায় তাই বেগনি আইশ্যাডো ছড়িয়ে দিতে পারব না। যা আমায় মানায়, সেটাই আমার সাজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন