প্রতীকী চিত্র
কথায় বলে, ভগবান যদি থেকে থাকেন, তা হলে আত্মার-ও অস্তিত্ব রয়েছে। এই বক্তব্যটিকে ‘সম্পূর্ণ ভুল’ বলে যে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তার পক্ষে আমি যুক্তি খাড়া করতে পারি বার বার। আমি বিশ্বাস করি ইতিবাচক এবং নেতিবাচক- দুই শক্তিকেই। বিশেষ করে কর্মসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় শ্যুটিং করতে গিয়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার এই ধারণা আরও স্পষ্ট হয়েছে।
যেমন ধরা যাক কোনও কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় শ্যুট চলছে। ইউনিটের একাধিক লোক উপস্থিত থাকা সত্বেও মনে হয়েছে বাইরের কেউ যেন দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে। কখনও একটি কালো ছায়া অনুসরণ করে চলেছে আমাদের। কথাগুলি পড়ে অবিশ্বাস্য লাগতেই পারে। তবে কোনও স্থানে আত্মা বা কোনও শক্তির উপস্থিতি থাকলে শরীরের ভিতরে যে অনুভূতিটা হয়, তাকে অস্বীকার করা যায় না মোটেই। আমার জীবনে এমন অভিজ্ঞতা কম নয়।
অনেক সময়ে আমাদের মতো বহু অভিনেত্রীদেরই কোনও দৃশ্যের স্বার্থে চুল সম্পূর্ণ খুলে রাখতে হয়। রাতের বেলা জঙ্গল অথবা পাহাড়ে শ্যুটিং করতে গিয়ে বুঝেছি পিছনে কেউ এক জন দাঁড়িয়ে রয়েছে। আবার এমনও হয়েছে যে বহু দূরে ক্যামেরা, আমাকে এগিয়ে যেতে হবে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে। এক তো জঙ্গলের রাস্তা, উপরন্তু কবরস্থান, প্রতি মুহুর্তে মনে হয়েছে যেন শুধু ক্যামেরার লেন্স নয়, আমাকে অনুসরণ করে চলেছে আরও কিছু চোখ। কখনও আবার ঘড়ির কাঁটা রাত আড়াইটের ঘর ছুঁলেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে হোটেলের আলো। কিছু কিছু আবার নিজে থেকেই উঠেছে জ্বলে। বুঝেছি কিছু ঘটনার আসলেই কোনও ব্যখ্যা হয় না।
এই তো কিছু বছর আগের কথা। আবারও সেই আউটডোর শ্যুটিং। গোটা টিম-সহ একটি বাংলোতে গিয়ে উঠেছি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমি আমার ঘরে একা ছিলাম। যত দূর মনে পড়ে, সেই সময়ে খুব ঠান্ডা পড়েছিল। সব দরজা-জানলা বন্ধ করে ঘরে নিজের মতো রয়েছি। হঠাৎ দেখি জানলার পর্দা উড়ছে। ঠিক যেন হাওয়া তোড়ে গতি পেয়েছে সেগুলি। কিন্তু এই হাওয়ার উৎসটাই বা কী? আগেই উল্লেখ করেছি, ঘরের সমস্ত জানলা-দরজা বন্ধ। এমনকী, সেই ঘরে কোনও ফ্যানেরও অস্তিত্ব নেই। এর পরেও ঘরের পর্দাগুলি কী ভাবে নড়ছিল, এর উত্তর আমার কাছে আজও অধরা…
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।