প্রতীকী চিত্র।
জগদ্ধাত্রী রূপে মাতা শক্তির আরাধনা পর্ব এ বছর এখনও শেষ হয়নি। আর, জগদ্ধাত্রী পুজো বলতেই সবার আগে যে জায়গার কথা মাথায় আসে, তা হল হুগলি জেলার প্রাচীন নাগরিক জনপদ তথা পূর্বতন ফরাসী উপনিবেশ চন্দননগর। কিন্তু, কখনও ভেবে দেখেছেন কি, এই শহরের নাম চন্দননগর হল কী ভাবে?
নানা সূত্র থেকে জানা যায়, এই নামকরণের কোনও নথিভুক্ত ঐতিহাসিক তথ্য বা প্রামাণ্য দলিল নেই। তবে, লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে নানা কাহিনি ও কিংবদন্তি। যার মধ্যে মূলত চারটিকে চন্দননগর নামকরণের সম্ভাব্য কারণ হিসাবে ধরা হয়।
প্রথম ধারণা:
শোনা যায়, মধ্য যুগে নাকি এই এলাকা ছিল তিনটি গ্রামের সমষ্টি। সেই গ্রামগুলি হল - বোরো, খলিসানি এবং গোন্দলপাড়া। কালক্রমে যা একত্রে চন্দননগর নামে পরিচিতি লাভ করে।
কথিত আছে, চাঁদ সওদাগর যখন নদী পথে বাণিজ্যে বেরিয়ে ছিলেন, সেই সময়ে কিছু দিনের জন্য এই এলাকায় তিনি থামেন এবং থাকেন। একই সঙ্গে, তখনই এখানে বোরাই চণ্ডীর একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। বলা হয়, এই কারণে তখনকার দিনে এই স্থানের নামকরণ হয় - চণ্ডীর নগর এবং চাঁদের নগর হিসাবে। ক্রমে এই দু'টি নাম এক হয়ে যায় এবং অপভ্রংশ হয়ে লোকমুখে প্রচলিত হয় - চন্দননগর নামে।
দ্বিতীয় ধারণা:
নদী তীরবর্তী এই প্রাচীন এলাকা ভৌগোলিক ভাবে অর্ধচন্দ্রাকার ছিল বলেও নানা মহলের দাবি সামনে আসে। সেই থেকেই নাকি এর প্রাথমিক নামকরণ করা হয় - চন্দ্রনগর। পরবর্তীতে যা হয়ে যায় - চন্দননগর।
তৃতীয় ধারণা:
বলা হয়, যেহেতু এই বসত এলাকা নদীর চরে গড়ে উঠেছিল, তাই স্থানীয় বাসিন্দারা একে বলতেন - চরনগর। অন্য দিকে, ফরাসি বণিক সম্প্রদায় একই কারণে এই স্থানকে সাদেরনগর বলে অবিহিত করতেন। পরবর্তী কালে এই দু'টি নাম মিলে গিয়ে হয়ে যায় - চন্দননগর।
চতুর্থ ধারণা:
শোনা যায়, এক সময় নাকি এই অঞ্চলে চন্দন গাছের জঙ্গল ছিল। ফরাসি ব্যবসায়ীরা সেই কাঠের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। যার জেরে ফরাসী সাহিত্যে এই স্থানকে - ভিলে দু বোয়িস দে স্যান্ডেল - অর্থাৎ - চন্দন কাষ্ঠের নগর - বলে উল্লেখ করা হয়। একটি দাবি অনুসারে, এর থেকেই নাকি চন্দননগর নামকরণ হয়।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।