Story of the first ever durga puja

বিশ্বের প্রথম দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন এই রাজা! শরতের বদলে কখন হয়েছিল দেবীর আরাধনা?

এ এক হৃতরাজ্য ফিরে পাওয়া আর পরমজ্ঞানের সন্ধানে এক রাজা ও এক বৈশ্যের চণ্ডী আরাধনার চিত্তাকর্ষক উপাখ্যান।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫২
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

পুজো মানেই আকাশে বাতাসে শিউলির সুবাস, প্যান্ডেলের ভিড় আর মন-কেমনের মিষ্টি সুর। এই শারদ উৎসবের সঙ্গে বাঙালির নাড়ির যোগ। কিন্তু এই যে দেবী দুর্গার আরাধনা, এর শুরুটা কবে এবং কোথায়? পুরাণ ঘাঁটলে এক ভারি মজার কাহিনি জানা যায়। কারণ, এই পৃথিবীতে প্রথম দুর্গোৎসবের সূচনা হয়েছিল শরৎকালে নয়, বরং বসন্তকালে! আর সেই ইতিহাসের নায়ক ছিলেন এক রাজা, সুরথ।

Advertisement

রাজা সুরথ ছিলেন চন্দ্রবংশীয়। কিন্তু ভাগ্য তাঁর সঙ্গ ছাড়ে। এক যুদ্ধে শত্রুর হাতে পরাজিত হয়ে রাজ্যপাট ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। এই সুযোগে রাজারই অমাত্যরা লুটে নেয় সব ধন-সম্পদ। রাজ্য হারিয়ে সুরথ ঘুরতে ঘুরতে এসে পৌঁছন মেধা ঋষির আশ্রমে। তপোবনে শান্তি ছিল বটে, কিন্তু হৃতরাজ্যের চিন্তা তাঁর মনকে ছাড়ছিল না।

আশ্রমে তাঁর দেখা হয় সমাধি নামক এক বৈশ্যের সঙ্গে। রাজাকে অবাক করে বৈশ্য জানালেন, তাঁকে তাঁরই স্ত্রী-পুত্রেরা সব কিছু কেড়ে নিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, রাজা এবং বৈশ্য উভয়ের মনেই প্রশ্ন— যাঁরা তাঁদের সর্বস্ব লুঠ করল, তাঁদের প্রতি ক্রুদ্ধ না হয়ে উলটে কেন অনুশোচনা ও শুভাশুভ চিন্তায় মন ভরে থাকছে?

Advertisement

এই জটিল প্রশ্নের উত্তর পেতে তাঁরা দু'জনে শরণাপন্ন হলেন ঋষি মেধার। ঋষি তখন চণ্ডীর দেবীমাহাত্ম্যের কাহিনি শোনালেন। বোঝালেন, এই সমস্ত মায়া, টান, মোহ সবই পরমেশ্বরী শক্তি মহামায়ার প্রভাব। ঋষির কথায় গভীর ভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি নদী তীরে শুরু করলেন কঠোর তপস্যা। দেখতে দেখতে তিন বছর কেটে গেল। তপস্যার শেষে তাঁরা আয়োজন করলেন দেবী দুর্গার আরাধনা। বসন্তকালে এই পুজো করার ফলেই এই উৎসব বাসন্তী পুজো নামেও পরিচিত।

দেবীর বরে ফলও মিলল হাতেনাতে। রাজা সুরথ ফিরে পেলেন তাঁর হৃতরাজ্য। আর বৈশ্য সমাধি? তিনি লাভ করলেন তত্ত্বজ্ঞান, যা শত সাম্রাজ্যের চেয়েও মূল্যবান!

তবে দুর্গা সম্পর্কিত অন্য সব কাহিনিগুলির মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রচলিত হল মহিষাসুর বধের আখ্যান। এই কাহিনিতে দেখা যায়, মহিষাসুর নামক এক প্রবল প্রতাপশালী অসুর দেবতাদের পরাজিত করে স্বর্গ দখল করে নিয়েছিল। দেবতারা তখন ব্রহ্মা, শিব ও নারায়ণের কাছে যান। মহিষাসুরের অত্যাচার শুনে ক্রোধে ব্রহ্ম, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের চোখ থেকে নির্গত হয় মহাতেজ! অন্যান্য দেবতাদের তেজও এসে মিশে গেল সেই তেজের সঙ্গে। হিমালয় শীর্ষে ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে সেই বিপুল তেজঃপুঞ্জ একত্রিত হয়ে এক নারীমূর্তিতে রূপান্তরিত হয়। দেব-নরের দুর্গতি নাশ করতে এলেন বলে তাঁর নাম হল দুর্গা।

দশভুজা দুর্গা তখন দেবতাদের দেওয়া নানা অস্ত্র ও বাহন সিংহ নিয়ে যাত্রা করলেন মহিষাসুর বধের উদ্দেশ্যে। দীর্ঘ যুদ্ধের পর দেবী দুর্গাই ত্রিশূল বসিয়ে বধ করলেন মহিষরূপী মহিষাসুরকে। এই মহাবিজয়ের উল্লাসেই বিজয়া দশমী পালিত হয়। পুরাণ অনুযায়ী, অমাবস্যার পরের শুক্লপক্ষের সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিথিতে ঋষি কাত্যায়ন এই দেবীর পুজো করেছিলেন। তাই সুরথের বসন্তের আরাধনা হোক বা শরৎকালের দুর্গাপুজো— সব কিছুর মূলেই রয়েছে সেই শক্তির জয়গান। সুরথের বসন্ত পুজো থেকে শুরু হয়ে মহিষাসুর বধের কাহিনি মিশে গড়ে ওঠে দুর্গোৎসবের আজকের রূপ।

‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement