9 Avatars of Durga

দেবীর অনন্ত রূপের মধ্যে নয়টি রূপ

মাতৃ আরাধনার গভীরে যাওয়ার আগে আসুন, মায়ের সমষ্টিগত রূপটি জানা যাক। আবার মহালয়া থেকে পরের ন’দিন মায়ের সমষ্টিগত রূপ হল নবদুর্গা।

Advertisement
তমোঘ্ন নস্কর
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:২৫
Share:
০১ ১৩

পন্ডিত শ্রী বাচস্পতি মিশ্র 'কৃতচিন্তামণি'-তে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ থেকে শ্লোক তুলে বলেছেন যে, বসন্ত শুক্লপক্ষের অষ্টমী ও নবমী তিথিতে দেবীর পুজো করেছিলেন শ্রী সুরথ। যা কিনা বর্তমানে বাসন্তী পূজা।

০২ ১৩

তারপর শ্রী রামচন্দ্র মা দুর্গার অকালবোধন করেন রাবণবধের আশায়। তখন সেই পুজো তিনলোকে-ই মান্যতা পায়। স্বর্গ থেকে দেবতারা পুষ্পবৃষ্টি করেন।

Advertisement
০৩ ১৩

মাতৃ আরাধনার গভীরে যাওয়ার আগে আসুন, মায়ের সমষ্টিগত রূপটি জানা যাক। আবার মহালয়া থেকে পরের ন’দিন মায়ের সমষ্টিগত রূপ হল নবদুর্গা। তাঁর নবদুর্গা মাহাত্ম্য পাঠ সাত্ত্বিক পূজার অঙ্গজপ।

০৪ ১৩

শৈলপুত্রী: দেবীর প্রতীক হল ভক্তি এবং সাধনা। কারণ, হিমালয়ের ভক্তিবৎসল প্রার্থনানুসারেই দেবী তাঁহার কন্যা পার্বতী রূপে আবির্ভূতা হয়েছিলেন। বৃষে আসীন দেবী শূল ও পদ্ম হস্তে মাতা।

০৫ ১৩

ব্রহ্মচারিণী: দেবীর প্রতীক আত্মসংযম। কঠিন তপস্যা দ্বারা লক্ষ-কোটি বাধাকে কাটিয়ে সাধনার মর্মস্থলে মনোযোগ স্থাপন করা। মা শ্বেতবসনা। রুদাক্ষমাল্য ও কমণ্ডলু হস্তে মাতা।

০৬ ১৩

চন্দ্রঘণ্টা: মায়ের মাথায় উজ্জ্বল চন্দ্র। এই চন্দ্রের অর্থ হল বোধ। বোধের ছটায় সাধকের অজ্ঞান ও অন্ধকার দূর হয়।

০৭ ১৩

কুষ্মাণ্ডা: কুৎসিত উষ্মা অর্থাৎ এই জগতের যাবতীয় শোক-তাপ-দুঃখ প্রভৃতি একমাত্র তিনিই হরণ করেছেন। জগৎ-সংসার তাহার অণ্ড বা গর্ভ মধ্যে। তাই তিনি জগতের মা, কুষ্মাণ্ডা। মাতা অষ্টভূজা, সিংহারূঢ়া। চক্র, গদা, পদ্ম, বাণ, ধনুক, কমন্ডলু, জপমাল্য ও অমৃত কলস এঁর হাতে।

০৮ ১৩

স্কন্দমাতা: ভল্লধারী( বল্লম) অগ্রগামী যোদ্ধা হলেন স্কন্দ। দেবসেনাপতি কার্তিক দেব তাই-ই। কার্তিকের মাতা তিনি, তাই তিনি স্কন্দমাতা। চতুর্ভূজা মাতার কোলে ধনুকধারী শিশু স্কন্দ ( কার্তিক), অন্য হাতে দুই পদ্ম ও বরাভয়।

০৯ ১৩

কাত্যায়নী: মা অষ্টাদশভূজা, উজ্জ্বল হারশোভিতা, যোদ্ধৃবেশ। কুমারী এবং স্বতন্ত্রা। সসাগরা ধরা তাঁর কোলে সুরক্ষিত।

১০ ১৩

কালরাত্রি: কাল অর্থাৎ সময় পঞ্চভূতের মারক। এক কথায় সবার সমাপ্তি ঘটায় সময়। কিন্তু দেবী হলেন সাক্ষাৎ শক্তি। বিজ্ঞানও বলে, শক্তির বিনাশ ও সৃষ্টি নেই। অর্থাৎ তিনি-ই অনন্ত। কালের শেষ তাঁর হাতে, তাই তিনি কালেরও রাত্রি অর্থাৎ বিনাশিকা। কারণ, প্রলয়কালে চলিত কালেরও বিনাশ হবে। তাই রূপও ভীষণ। আলুলায়িত বেনী ( খোলা চুল), কৃষ্ণবর্ণ, অট্টহাস্য, খড়্গ-লৌহকন্টক-বরাভয় হস্ত।

১১ ১৩

মহাগৌরী: মাতৃকায়া উজ্জ্বল, কলুষ বিহীন। মাতা কিন্তু আদিতে ঘোরতর কৃষ্ণবর্ণা। মহাদেব তাই বলে ফেলেছিলেন, কালী! এতে মাতা অভিমানী হয়েছিলেন। ধ্যানে বসলেন দেবী। গৌরবর্ণা গৌরী তাঁকে হতেই হবে। প্রজাপতি ব্রহ্মা তাঁকে গৌরী করলেন, কিন্তু সেই সাথে নিজেও পাল্টা বর চেয়ে নিলেন। এই কালী রূপ তিনি ছাড়বেন না। এই রূপেই সময় এলে তিনি বধ করবেন শুম্ভ-নিশুম্ভকে। দেবী সম্মত হলেন। আমরা পেলাম পরিপূরক রূপ— দেবী কৌশিকি, দেবী চামুণ্ডা ও মাতা চণ্ডী। তাই তো হয়, সন্ধিপুজো! চণ্ড-মুণ্ড সহ সমগ্র অসুর বধ করতে মায়ের লেগেছিল দুই দণ্ডকাল, অর্থাৎ অষ্টমী-নবমীর ২৪ মিনিট করে ৪৮ মিনিট। মহা গৌরী হতে চামুণ্ডা হয়ে চণ্ড-মুণ্ড অর্থাৎ কু-প্রবৃত্তি কে নিবৃত্তি দিয়েছিলেন। আবার একেবারে যোগ মুহূর্তে বা শূন্য মুহূর্তে বধ হল মহিষাসুর রূপ আত্ম- অহং।তাই তো ১০৮ ভক্তিদীপে, অন্তঃস্থিত ১০৮ পদ্ম সমর্পণে সন্ধিপূজা সমাপন হয়। সন্ধিপূজা আসলে মনশুদ্ধি।

১২ ১৩

সিদ্ধিদাত্রী: সব শেষে সাধনায় সিদ্ধিলাভ সত্য। শাশ্বত মাতৃ কায়া, পদ্মকোরকে আসীন মাতা। শাড়ির আঁচল-এ মহাকাশ। আলুলায়িত কবরীভার (এলো চুল) হল জাগতিক জ্ঞানের গুচ্ছমূল। চার হাতে শঙ্খ -চক্র-গদা-পদ্ম অর্থাৎ সৃষ্টি -লয়-পালন-বারন।

১৩ ১৩

দুর্গা, এক দেবীরই অনন্ত রূপের মধ্যে নয়টি রূপ বিশেষভাবে ধ্যেয় ( ধ্যানের যোগ্য) বলে শাস্ত্রে নিৰ্দ্দিষ্ট হয়েছে। আমরা তাঁকেই স্মরণ করি। ঋণ- বঙ্গে দুর্গোৎসব - শ্রীগিরিশ চন্দ্র বেদান্ততীর্থ, বাংলার দুর্গোৎসব - শ্রীনির্মল কর। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement