Heritage Durga Puja

৫০০ বছর ধরে মা দুর্গা এখানে একা পুজো পান, পুত্র-কন্যা নন! কোথায় হয় এমন পুজো?

শান্তিপুরের রায় বাড়িতে দুর্গা একা পূজিত হন। অসুরের হাতে থাকে খড়্গের বদলে মাটির তলোয়ার। পূজার আচারও একটু অন্য ধাঁচের। যাবেন নাকি এমন পুজো দেখতে! তার আগে পড়ে নিন এই প্রতিবেদন।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:০৩
Share:

শান্তিপুরের রায় বাড়ি

পুরনো নকশা কাটা দোতলা বাড়ি। এক অংশে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। সামনে ফাঁকা চত্বর। পাশেই দেবীর দালান ঘর। নদিয়ার শান্তিপুর স্টেশন থেকে বাইক, নয়তো গাড়ি করে মিনিট কুড়ির পথ। শান্তিপুরের রায় বাড়ি। জমিদার পরিবার। তাঁদের দুর্গাপুজো প্রায় ৫০০ বছরের বেশি পুরনো। মা দুর্গা এখানে ‘কুলোপতি’ দেবী নামে পরিচিত। দেবীর রূপ সাধারণই। দশ হাতে অসুর বধ করছেন তিনি। অসুরের চেহারায় রয়েছে বদল। হাতে খড়্গর পরিবর্তে রয়েছে মাটির তলোয়ার।

Advertisement

শহর বা শহর ছাড়িয়ে বিভিন্ন বনেদি পুজোতে দেবী তাঁর সন্তানদের সঙ্গেই পূজিত হন। কিন্তু এঁদের এখানে তাতেও বদল। শান্তিপুরের রায়বাড়ির পুজোয়‌ মা দুর্গা একা একাই পূজিত হন। নেই লক্ষী-সরস্বতী, গণেশ-কার্তিককে। রায় বাড়িতে মা একা। একদম শুরুর দিকে ‘কুলো’কে দেবীর হিসেবে পুজো করা হত। তার পরে কিছু সময় গড়িয়ে যাওয়ার পর মূর্তি তৈরি শুরু হয়। তা’ও শুধুই দুর্গার। কথিত আছে, এখানে পুজো শুরু হয় মায়ের ‘স্বপ্নাদেশ’ পাওয়ার পর। এ নিয়ে একটি কাহিনি চালু আছে।

সেই কাহিনি বলে, রায় পরিবারের কাছে এক মহিলা একা এসে কিছু সাহায্য চান। লাল পাড়ের শাড়িতে এসেছিলেন তিনি। সেই মহিলা রায় পরিবারের ‘কর্তা মা’কে বলেন, ‘আমার স্বামী শ্মশানে-শ্মশানে ঘুরে বেড়ান। সন্তানরা রয়েছে। আমাকে সাহায্য করুন।’

Advertisement

তখন জমিদারি পরিবারের তরফ থেকে বলা হয়, সন্তানদের নিয়ে আসুন। সাহায্য করা হবে। এর পরেই রাতের বেলায় স্বপ্নাদেশ পান তাঁরা। স্বপ্নে মা জানান, তিনি রায় পরিবার হাতে পুজো পেতে চান।

পরিবারে তরফে দুর্গাপুজো করার সামর্থ্য না থাকায় ‘কুলো’রূপে মাকে পুজো করা শুরু হয়। এই কথাও নাকি দেবী নিজেই স্বপ্নাদেশে বলেছেন। তার পরে আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটলে জমিদার পরিবারের তরফ থেকে শুধুমাত্র দেবী দুর্গার মূর্তি বানিয়ে পুজো করা শুরু হয়।

রায় বাড়ির দুর্গা পুজোতে ভোগের ক্ষেত্রেও বিশেষত্ব রয়েছে। পঞ্চমী থেকে মায়ের ভোগ দেওয়া শুরু হয়। এর পর মায়ের বোধনের থেকে সাধারণ নিয়ম মেনেই ভোগ দেওয়া হয়। কিন্তু অষ্টমী এবং নবমীর সন্ধিক্ষণে সন্ধির পুজোর পর মায়ের ভোগে দুই রকম মাছ দেওয়া হয়। ভোগের জন্য প্রতিদিন পায়েস রান্না হয় এখানে।

দশমীর দিন দেবীকে বিদায় জানানোর সময় পায়েস মুখেই বিদায় জানানো হয়। এবারেও সেজে উঠছে রায় বাড়ি। দূর দূরান্তে বাস করা পরিবারের লোকজন তাঁদের বাড়িতে ফিরতে সাগ্রহে তাকিয়ে আছেন আগামী দুর্গাপুজোর দিকে।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন