১। রাম-রাবণের যুদ্ধ তখন তুঙ্গে। একে একে পতন হচ্ছে লঙ্কার মহাবীরদের।
২। সেই সময়ে রাবণ নিজেই দুর্গার শরণ নিলেন, স্তবপাঠে মন দিলেন একাগ্র হয়ে।
৩। মা দুর্গা সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে কালীরূপে আশীর্বাদ দিলেন। আশীর্বাদের শক্তিতে রাবণ যেন হয়ে উঠলেন অপরাজেয়।
৪। বিপদের আঁচ টের পেয়ে রামচন্দ্র বুঝলেন, এই যুদ্ধে জয় অসম্ভব। দেবী দুর্গাকে তুষ্ট করতে বসন্তকালের বদলে শরৎকালেই তাঁর পুজো করতে মনস্থির করলেন রাম।
৫। কিন্তু, সেই পুজোতে কে হবেন পুরোহিত? এ এক বড়ই জটিল প্রশ্ন ছিল।
৬। এর উত্তর খুঁজতেই ব্রহ্মা পরামর্শ দিলেন, এই পুজোর জন্য রাবণের চেয়ে যোগ্য পুরোহিত আর কেউ হতেই পারেন না।
৭। অসম্ভব বলে মনে হলেও, শেষ পর্যন্ত রাবণকেই পৌরোহিত্য করার অনুরোধ জানান রাম। কারণ রাবণের পৌরোহিত্য ছাড়া এই পুজো অসম্পূর্ণ। রামের অনুরোধে এই শর্তে রাজিও হয়েছিলেন রাবণ।
৮। পৌরোহিত্যের আগে তিনি রামকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে পুজোর পরে তাঁকে লঙ্কায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। রামচন্দ্র সেই অনুরোধ রেখেছিলেন।
৯। নিজের মৃত্যুর সংকল্প করেই পুজোর পৌরোহিত্য করেছিলেন রাবণ।
১০। বোধনের মন্ত্র পাঠ করতে গিয়ে রাবণ উচ্চারণ করলেন, “রাবণস্য বধার্থায়…”। অর্থাৎ নিজের মৃত্যুর উদ্দেশেই সংকল্প বেঁধে দিলেন তিনি।
১১। এই কাহিনি বাল্মীকি রামায়ণে নেই। তবে কৃত্তিবাস ওঝা তাঁর রামায়ণে এই অকালবোধনের কাহিনি সবিস্তারে লিখেছেন।
১২। শোনা যায়, দেবী ভাগবত পুরাণ ও কালিকাপুরাণেও এই কাহিনির উল্লেখ পাওয়া যায়। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)