Durga Puja Celebration

আগুনের উদ্বেগ বুকে রাত জাগছে কাদির

এক বছর আগের সেই রাতটা এখনও তাড়া করে মেমরাজপুরের আব্দুল কাদিরকে।

Advertisement

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ১০:০০
Share:

আব্দুল কাদিরের চোখে ঘুম নেই। সারা রাত আগুনের দুঃস্বপ্ন তাঁর, এই বুঝি এসি মেশিন থেকে গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করল কিংবা মশার ধূপ থেকে এই বুঝি আঁচলে লাগল আগুন!

Advertisement

এক বছর আগের সেই রাতটা এখনও তাড়া করে মেমরাজপুরের আব্দুল কাদিরকে। তাঁর মেয়ে সামিমা খাতুন ভর্তি রয়েছে জঙ্গিপুর হাসপাতালে। আর এক বুক উদ্বেগ নিয়ে আব্দুল রাত জাগছেন হাসপাতালের খোলা বিশ্রামাগারে। বলছেন, ‘‘বাব্বা, এখনও মনে আছে গত বছরের ঘটনাটা। বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছিল বৌ।’’

কাদিরের মতো রোগীর বাড়ির অনেক লোকেরই হাসপাতালে আগুনের স্মৃতি চলকে ওঠে। কারও স্মৃতিতে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ তো কারও স্থানীয় নার্সিংহোম। ওই হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন ধুলিয়ানের এক বৃদ্ধ। তাঁর জামাই জানিয়ে গেলেন, ‘‘বহরমপুর হাসপাতালে আগুন লাগার পরে গ্রামের আর কেউ ওমুখো হন না, কে জানে বাবা আবার কখনও ধোঁয়া বের হতে থাকবে!’’

Advertisement

আরও পড়ুন: গ্রিনসিটি মডেলে সেজে উঠছে মণ্ডপ​

আরও পড়ুন: মণ্ডপ জুড়ে শহরের স্মৃতিকথা​

জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার কল্যাণব্রত মন্ডল অবশ্য অভয় দিচ্ছেন, ‘‘আরে মশাই, আগুন একটা দুর্ঘটনা। তবে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগার পর থেকেই সতর্কতা বেড়েছে।” তাঁর আশ্বাসের বহরে থাকছে— মাস চারেকের মধ্যেই বড় জলাধার তৈরি হবে হাসপাতাল চত্বরে। ফায়ার এক্সটিঙ্গুইসার লাগানো হবে হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডে। তালিকায় রয়েছে আরও অনেক প্রতিশ্রুতি। সে সবই তো ভবিষ্যতের ব্যাপার। হাসপাতালের এখন কি অবস্থা?

ধরা যাক, শিশু-ওয়ার্ড, অনেকটা খাঁচার মতো তার চেহারা। সেখানেই মশা তাড়াতে একের পর এক জ্বলছে কয়েল। হাসপাতালের এক কর্মী জানাচ্ছেন, মহিলা জেগে থাকায় অঘটন কিছু ঘটেনি। তবে ঘুমোলে ভয়াবহ কিছু ঘটতেই পারত। সাক্ষি রেহেনা বিবি বলছেন, “এমন কয়েল কেউ জ্বালায়। একে তো বাচ্চাদের ওয়ার্ড, বলা তো যায় না, কি থেকে কি হয়ে যায়!’’

এক বছরও পেরোয়নি জঙ্গিপুর হাসপাতালের পাশেই ভয়াবহ আগুনে পুড়েছিল একটি নার্সিংহোম। ভর্তি ২৮ জন মহিলাকে বের করতে ভাঙতে হয়েছিল হাসপাতালের দরজা, জানালা। অনেকেরই ঠাঁই হয়েছিল আশপাশের সরকারি হাসপাতালে। তবে আগুন লাগলেই বা কি, বিশ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও দমকল কেন্দ্র নেই। ধুলিয়ান থেকে দমকলের ইঞ্জিন আসতে আসতেই সব পুড়ে খাক হয়ে যাবে! জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য মোজাহারুল ইসলামের গলায় সেই উদ্বেগ বড় স্পষ্ট, “রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে পর পর আগুন লাগছে। আসলে প্রথমেই যেটা দরকার, রঘুনাথগঞ্জে একটি দমকল কেন্দ্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন