মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প গ্রিনসিটিকে থিম করে এ বার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের বিপ্লবী সঙ্ঘের পুজো জেলায় তো বটেই, রাজ্যেও নজর কাড়তে চলেছে বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। তাঁদের কাছেই জানা গেল, বালুরঘাট থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার পূর্বে হিলির যমুনা সেতু পেরিয়ে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কাছে বিপ্লবীর পুজো মণ্ডপ জুড়ে গড়ে উঠবে সবুজের দেশ।
প্রায় সত্তর ফুট উঁচু এবং ১০৬ ফুট চওড়া মণ্ডপটি লন্ডনের বাংলো বাড়ির ধাঁচে গাছপালায় জড়ানো এক সুদৃশ্য প্রাসাদের মতো করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ জন্য বাইরে থেকে আনা হয়েছে কৃত্রিম সবুজ ঘাস, সোনালি, রুপোলি ও সাদা পাতা। গাছগাছালিতে ভরা বাগানে বাবুইপাখির বাসা, কাঠঠোকড়া, কাঠবেড়ালিরও দেখা মিলবে। এ ছাড়া, পুরনো আমলের ঝাড়বাতি, চিমনি, লণ্ঠন বসিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে এখানে।
ডেকোরেটর শিল্পী রাজনারায়ণ সাহার কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কোনও পুজো মণ্ডপে প্রকৃতির এমন সবুজ রূপ তুলে ধরা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী যেমনটি চান, গ্রিনসিটি প্রকল্পের সেই পুরো মডেল এ বার হিলির বিপ্লবী সঙ্ঘের পুজোয় তুলে ধরা হবে।’’ তিনি জানালেন, মণ্ডপসজ্জায় নিপুণ কারুকার্য ও জৌলুস তুলে ধরতে গত তিন মাস ধরে ডেকোরেটরের কারখানায় ৪৫ জন মহিলা দিনরাত ফুল, কলকা, পুঁথি ও জরির নকশা তৈরির কাজে ব্যস্ত। অপটিক ফাইভার দিয়ে তৈরি হচ্ছে বড় বড় সিংহ, হাতি, হরিণের পাশাপাশি ব্রিটিশ আদলে গিটার, বেহালা ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রধারী শিল্পীর মডেল। লন্ডন শহরের ধাঁচে পথবাতি। রকমারি আলোয় আবৃত ফাইবারের মূর্তি মডেলের এক নজরকাড়া ছবি দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরতে চন্দননগরের আলোক শিল্পীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হচ্ছে দুর্গা প্রতিমা।
আরও পড়ুন: মণ্ডপ জুড়ে শহরের স্মৃতিকথা
আরও পড়ুন: উচ্চারণ ও পুজোর পাঠ দিতে কার্তিকের প্রশিক্ষণ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতাকে লন্ডন শহরের মতো করে তৈরির স্বপ্ন দেখেন। তার একটি প্রতিচ্ছবি মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান বিপ্লবীর পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা গণেশ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘জেলা নয়, এ বার রাজ্যের পুজো-প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবছি। সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে তাই সেরা পুজোর লক্ষ্যে গ্রিনসিটিকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে হিলি সীমান্তের বিপ্লবীর পুজো।’’
ছবি: মীরা মজুমদার।