durga puja travel to Barse

রডোডেনড্রন ফুটুক না ফুটুক, বারসে স্বপ্নপুরী

পাহাড়ি রাস্তা, কিন্তু চড়াই উতরাই বিশেষ নেই। হাঁটতে কোনও কষ্টই হবে না। হিলে থেকে ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই অনায়াসে পৌঁছে যাবেন। আর তার পর? যা অভিজ্ঞতা হবে, সারা জীবন তাকে সিন্দুকে তুলে রাখার মতো।

Advertisement

প্রদীপ্ত চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ২০:১৬
Share:

ছবি: লেখক

প্রায় সমতল রাস্তায় কিলোমিটা্র পাঁচেক হাঁটতে পারলেই পৌঁছে যাবেন এক স্বপ্নপুরীতে। শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতে হিলে ঘন্টা সাতেক লাগবে। সরাসরি গাড়ি না পেলে শিলিগুড়ি থেকে জোড়থাং আসুন, সেখান থেকে হিলে। হিলেতে খুব সাধারণ থাকার ব্যবস্থা।

Advertisement

রাতটা কাটিয়ে পরদিন সকালে রওনা দিন বারসের দিকে। ভারী মালপত্র হিলেতেই হোটেলে রেখে দিন। একান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস আর শীতবস্ত্র নিয়ে হাঁটা শুরু করুন। চাইলে সামান্য টাকার বিনিময়ে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবেও নিয়ে নিতে পারেন।

উপরি পাওনা, সে আপনার একটা ব্যাগও বয়ে দেবে। রডোডেন্ড্রনের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে রাস্তা আপনাকে নিয়ে যাবে ১০ হাজার ফিটের বেশি উচ্চতার বারসেতে। মার্চ এপ্রিলে রডোডেনড্রন এই পথ, বারসেকে স্বপ্নপুরী করে রেখেছে। আর অক্টোবরে, মেঘমুক্ত আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘা যখন দেখা দেবে, তখন মনে হবে রডোডেনড্রন ফুটুক না ফুটুক, বারসে স্বপ্নপুরী।

Advertisement

ছবি: লেখক

পাহাড়ি রাস্তা, কিন্তু চড়াই উতরাই বিশেষ নেই। হাঁটতে কোনও কষ্টই হবে না। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই অনায়াসে পৌঁছে যাবেন। বারসেতে থাকার ব্যবস্থা গুরাস কুঞ্জ-এ, তবে একটি মাত্র ঘর, তা পাওয়ার আশা না করাই ভাল, তবে ডরমিটরি পাবেন। আর আছে অধীর পালের ব্যবস্থাপনায় ফরেস্ট গার্ডদের থাকার জায়গার একাংশ নিয়ে অতি সাধারণ থাকার ব্যবস্থা। চাইলে তাঁবুর ব্যবস্থাও করে দেয়।

একটা রাত কষ্ট করলে বিনিময়ে যা পাবেন, সারা জীবন গল্প বলার মত। রাতে প্রচন্ড ঠান্ডা, সকালে হয়তো দেখবেন ঘাসের উপর রাতের শিশির জমে বরফ হয়ে গেছে। আর ততক্ষণে নীল আকাশের গায়ে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।

ছবি: লেখক

আবছা আলোয় সেই যে দেখবেন, আর চোখ ফেরানো মুশকিল। বার বার রঙ পালটাবে, লাল, তারপর সোনালি, সবশেষে ঝকঝকে সাদা। আর আছে পাখির দল। আপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেই রাজি নয় তারা। আসলে বারসে রডোডেন্ড্রন স্যাঙ্কচুয়ারি, গুরাসকুঞ্জের ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে আছে শুধু জঙ্গল। এই পথে নাকি লালপান্ডা ও দেখা যায়, তবে এই লাজুক প্রাণীটির দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। দেখবেন রাস্তার ধারে বুনো শুয়োরের মাটি খুঁড়ে খাবার খোঁজার চিহ্ন।

কোথা দিয়ে দিয়ে যে সময় কেটে যাবে বুঝতেই পারবেন না। প্রাতরাশ সেরে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করুন। একই পথ ধরে ফিরে আসুন হিলে। হিলে থেকে ফেরার পথে সোমবারিয়া থেকে কালুক ও ঘুরে আসতে পারেন। সেও আরেক স্বপ্নপুরী।

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন