প্রতীকী ছবি।
বিবাহিত নারীদের ৮০ শতাংশই জীবনের কোনও না কোনও পর্যায়ে স্বামীর হাতে শারীরিক, মানসিক, যৌন বা অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হন। এক প্রতিবদনে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। রবিবার শের-ই-বাংলায় এনইসি সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ-২০১৫’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে বিবিএস।
প্রতিবেদনে তথ্য তুলে ধরে ব্যুরোর প্রকল্প পরিচালক জাহিদুল হক সরদার জানিয়েছেন, ২০১১ সালের প্রতিবেদনে নির্যাতনের শিকার নারীর হার ছিল ৮৭ শতাংশ। চার বছরে বিবাহিত নারীদের ওপর নির্যাতন কমে হয়েছে ৮০ শতাংশ। তবে গত চার বছরে বিবাহিত নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন কমলেও শারীরিক নির্যাতন বেড়েছে। জাহিদুল হক সরদার জানিয়েছেন, ২০১৫ সালের ১৩ থেকে ২২ অগাস্ট সারা দেশে ২১ হাজার ৬৮৮ জন নারীর সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের জরিপে অংশগ্রহণকারী বিবাহিত নারীদের ৫০ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা বলেছেন। আর যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা বলেছেন ২৭ শতাংশ বিবাহিত নারী। ২০১১ সালে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের এই হার ছিল যথাক্রমে প্রায় ৪৮ শতাংশ ও ৩৭ শতাংশ। ১৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী বিবাহিত নারীরা নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা বলেছেন সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ ই-পরিচয়পত্র দেওয়া শুরু করলেন হাসিনা
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এই জরিপে অংশ নেওয়া গ্রামের বিবাহিত নারীদের ৫১. ৮ শতাংশ জীবনের এক বার হলেও স্বামীর নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। শহরে এই হার ৪৮.৫ শতাংশ। আর জাতীয় পর্যায়ে ৪৯.৬ শতাংশ। অর্থনৈতিক নির্যাতনের ক্ষেত্রেও জাতীয় ও গ্রামীণ চিত্র প্রায় অভিন্ন। গ্রামের ১২ শতাংশ বিবাহিত নারী স্বামীর মাধ্যমে অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। শহরে এই হার ১০.২ শতাংশ আর জাতীয় পর্যায়ে ১১.৪ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মহম্মদ আব্দুল ওয়াজেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী মুস্তফা কামাল। সভায় তিনি বলেন, “নারীর প্রতি হিংসা গোটা দুনিয়ারই একটি জ্বলন্ত সমস্যা। বর্তমান সরকার নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়ায় হিংসা আগের চেয়ে কমেছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, নারী নির্য়াতন একদম বন্ধ করা সম্ভব হবে না। তবে তা ক কমিয়ে আনা সম্ভব।