নিন্দুকেরা নিন্দে করুন, বাংলাদেশের জাম্বো বাজেট উন্নয়নের সাহসী ডানা

ব্যতিক্রমী বাজেট বাংলাদেশে। উন্নয়নে জোর। টাকা নেই বলে হাপিত্যেশ নয়। তার সংস্থানও থাকছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতির ডানা জুড়েছেন দেশের গায়ে। পিছিয়ে পড়া নয়, অবিশ্রান্ত উড়ান। স্বপ্নের প্রতিষ্ঠা বাস্তবের মাটিতে। ঝুঁকি আছে। সেটা সামাল দেওয়ার দুঃসাহস কম না।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ১৮:৪৯
Share:

ব্যতিক্রমী বাজেট বাংলাদেশে। উন্নয়নে জোর। টাকা নেই বলে হাপিত্যেশ নয়। তার সংস্থানও থাকছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতির ডানা জুড়েছেন দেশের গায়ে। পিছিয়ে পড়া নয়, অবিশ্রান্ত উড়ান। স্বপ্নের প্রতিষ্ঠা বাস্তবের মাটিতে। ঝুঁকি আছে। সেটা সামাল দেওয়ার দুঃসাহস কম না। উন্নয়নে খরচ এক লক্ষ কোটির বেশি। টাকাটা আসবে কোত্থেকে! নিশ্চিত ব্যবস্থা। শুধু উন্নয়ন কেন গোটা বাজেটটাই তো স্ফীতকায়। সব মিলিয়ে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি। এত বড় বাজেট বাংলাদেশ কখনও দেখেনি। বরাবর ছোট-মাঝারিতে সীমাবদ্ধ থেকেছে। এবার জাম্বো বাজেট।

Advertisement

সমালোচনার ঝড় তো উঠবেই। মধ্যবিত্ত চিন্তা, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কিছু করার দরকার কী। যা আছে তাই নিয়ে কুড়িয়ে বাড়িয়ে চললেই হয়। এক লাফে আকাশ ছুঁতে হবে তার কী মানে। পা টিপে সাবধানে এগোনাই তো ভাল। বিপদে পড়তে হয় না। বিরূপ কথা তুচ্ছ করে, আয় বাড়াতে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭০২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়। বাকি ঘাটতি থাকছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি। সেটা মেটাতে ব্যাঙ্ক, সঞ্চয় পত্র, বৈদেশিক ঋণ।

বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে সন্তোষ প্রকাশ সৌদি আরবের রাজা সলমনের। ঢাকা-রিয়াধ সম্পর্ক আরও নিবিড়। এগোতে গেলে বন্ধুর দরকার। একা হয় না। সৌদির মতো দেশ পাশে থাকায় বাংলাদেশ অনেকটা নিশ্চিন্ত। ইউরোপ-আমেরিকা, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ভাবে ভাবছে। তারা চমকেছে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার দেখে। বিশ্বব্যাঙ্ক, এশীয় ব্যাঙ্ক তো বলেইছে, এটা কল্পনাতীত। যেখানে ৬.৫ এর বেশি আশা করা হয়নি, সেখানে এক ধাক্কায় ৭.৫। শ্রীবৃদ্ধির ছবিটা স্পর্শ করেছে বিশ্বকে। শুধু কথায় নয়, কাজে করে দেখালে আস্থা তো বাড়বেই।

Advertisement

গত বছরের চেয়ে এবারের বাজেট ৪৫ হাজার ৫০৫ কোটি বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এলবিআর-এর বাইরে কর আদায় হবে ৭ হাজার ২০০ কোটি। সরকারি পরিষেবা, কর বহির্ভূত উৎস থেকে আয় ৩২ হাজার ৩৫০ কোটি। বিদেশি সাহায্য যেহেতু ফেরত দেওয়ার প্রশ্ন নেই, তাই এটিকে রাজস্ব আয় ধরে নিলে আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৮ হাজার ২৬৮ কোটি।

সব বন্ধু দেশের সাহায্যের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। সেটা না পেলে অসুবিধে হত। বৈদেশিক অনুদান বাদ দিলে ঘাটতির পরিমাণ ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি। পেলে পাঁচ হাজার কোটি কমবে। আপাতত না পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে, ৩৮ হাজার ৯৪৭ কোটি। তার থেকে আগে নেওয়া বিদেশি ঋণের সুদ দিতে খরচ ৮ হাজার ১৫৮ কোটি। সেটা বাদ দিলে ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩০ হাজার ৭৮৯ কোটি। দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ ৬১ হাজার ৫৪৮ কোটি। তার মধ্যে ব্যাঙ্ক থেকে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি। সঞ্চয়পত্র সূত্রে মিলবে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি। আরও অন্য উৎস থেকে ঋণ তিন হাজার কোটি। এত সব হিসেব নিকেশ উন্নয়নের স্বার্থেই। উন্নয়ন ব্যয় এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮০ লাখ। উন্নয়নের চাপে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি কিন্তু বাদ যায় নি। সেখানে খরচ ১ হাজার ৮২৬ কোটি। সব দিক বাঁচিয়েই উন্নয়ন। সম্মুখ পানে চলতে পালে হাওয়ার অভাব নেই।

আরও পড়ুন:
দু’বছরের মধ্যে বাংলাদেশে ১৪২ তলা অট্টালিকা, পাকিস্তান ‘জ্বলছে’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন