‘ননস্টপ বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশে শুরু হল তিন দিনব্যাপী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক দেশের সবচেয়ে বড় মেলা ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৬’। বুধবার রাজধানী ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিনব্যাপী এই মেলা আগামী শুক্রবার পর্যন্ত প্রতি দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য খোলা থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আইসিটি ব্যবহারে তরুণ জনগোষ্ঠী নিয়ে আমরা ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ প্রকল্প চালু করেছি। প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার তরুণ-তরুণীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০১৬ করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামি লিগ সরকার দেশের স্বার্থে অর্থ ব্যয় করে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে সারা দেশে ৩০ হাজার মাল্টিমিডিয়া ক্লাস চালু করেছি। ২০১৮ সালের মধ্যে আরও দশ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব চালু করা হবে।” ইতোমেধ্যে দেশের প্রায় সব উপ-জেলাতেই থ্রি-জি পৌঁছে গিয়েছে। আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে ফোর-জি চালু হয়ে যাবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানিয়েছে, ডিজিটাল বিষয়ক নয়া প্রযুক্তি ও অভিনবত্ব বিষয়ে ধারণা ও তথ্য আদানপ্রদানের জন্য এই মেলা। ৪০টি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে কী কী পরিষেবা দিচ্ছে তার খুঁটিনাটি তুলে ধরা হবে এই মেলায়। এতে শতাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের ডিজিটাল কার্যক্রম তুলে ধরবে। তিন দিনব্যাপী মেলায় মাইক্রোসফ্ট, ফেসবুক, একসেন্চার, বিশ্বব্যাঙ্ক, জেডটিই, হুয়াওয়ে-সহ বিশ্ব প্রতিষ্ঠানের ৪৩ জন বিদেশি বক্তা-সহ দুই শতাধিক বক্তা ১৮টি সেশনে অংশ নেবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন বাংলাদেশ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) ও অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) কর্মসূচির পরিচালক কবীর বিন আনোয়ার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যামসুন্দর শিকদার, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার প্রমুখ।
দেশের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইটি কেরিয়ার বিষয়ক সম্মেলনের পাশাপাশি প্রথম বারের মতো উন্নয়ন সহযোগিদের নিয়ে থাকবে ডেভেলপার সম্মেলন। এ ছাড়া, সফটওয়ার শো-কেসিং, ই-গভর্নেন্স এক্সপোজিসন, মোবাইল ইনোভেশন, ই-কমার্স এক্সপো, স্টার্টআপ জোন ছাড়াও থাকবে আইটি সংশ্লিষ্ট ১২টি সেমিনার। আয়োজন করা হবে ডেভেলপমেন্ট পার্টনার্স কনফারেন্স, আইসিটি এডুকেশন সম্মেলন।
বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস এবং এটুআই কর্মসূচি যৌথ ভাবে আয়োজিত হবে এই মেলায়। প্রতি দিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উদ্যোক্তাদের আশা, তিন দিনে এ মেলায় পাঁচ লাখ মানুষের সমাগম হবে।
আরও পড়ুন
চিন পর্যন্ত টিকতে পারেনি, বাংলাদেশের ভরসাতেই পোশাক শিল্পে হাইতি