আর এক দুর্নীতি মামলায় ৭ বছর জেল খালেদার

খালেদা জিয়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি থাকায় এ দিনও আদালতে আসেননি। তিনি যে কারাগারে রয়েছেন, সেখানেই আদালত বিচার কাজ করছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৪
Share:

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি-র নেত্রীর ৭ বছরের কারাদণ্ড। ছবি: সংগৃহীত।

অনাথালয়ের কয়েক কোটি টাকা সরানোর মামলায় কয়েক মাস আগেই ৫ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। সোমবার আরও একটি দুর্নীতির মামলায় বিএনপি-র এই নেত্রীকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত জানাল, ‘‘খালেদা জিয়া রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত ট্রাস্টের জন্য অবৈধ ভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছেন ও তা ব্যয় করেছেন। পরবর্তীতে কেউ যাতে এই রকম কাজে উৎসাহিত না হয়, সে জন্য তাঁকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হল।’’

Advertisement

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার পাশাপাশি দুর্নীতিতে তিন সহযোগী তাঁর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার তৎকালীন মেয়রের একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকেও ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। হারিছ পলাতক হলেও মুন্না ও মনিরুল এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন। খালেদা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে ভর্তি থাকায় এ দিনও আদালতে আসেননি। তিনি যে কারাগারে রয়েছেন, সেখানেই আদালত বিচার কাজ করছিল। কারাগারেই এ দিন প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে রায় পড়ে শোনান বিচারক। খালেদাকে ৭ বছরের জেল ছাড়াও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ট্রাস্টের নামে কেনা ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।

এর আগে জিয়া অনাথালয় দুর্নীতি মামলায় খালেদাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও তাঁর পুত্র তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। তার পরে খালেদা জামিন পেলেও আইনি জটিলতায় মুক্তি পাননি। নতুন কারাদণ্ড পাওয়ার পরে ডিসেম্বরে ভোটের আগে তাঁর মুক্তি এক রকম অসম্ভব হয়ে পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রায় ১১ বছর আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই দুই দুর্নীতির মামলা শুরু হয়েছিল। এ দিন রায়ের পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, ‘‘আমরা সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিলাম। তা পেয়েছি।’’ আসামি পক্ষের কোনও আইনজীবী আদালতে হাজির ছিলেন না। তবে বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির রায়কে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘‘নিম্ন আদালতে মানুষ আর ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। এই রায় ফরমায়েসি।’’ কাল সারা দেশে জেলা সদর ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি।

গত ফেব্রুয়ারিতে আগের মামলায় জেলে যাওয়ার পরে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আর আদালতে হাজির হচ্ছিলেন না খালেদা। বিচার কাজ চালানোর জন্য তাঁর জেলেই আদালত বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর শেষ বার তিনি জেলের আদালতে হাজির হয়ে জানিয়ে দেন, এজলাসে বসে থাকলেও তাঁর পা ফোলে। বিচারক যত খুশি সাজা দিতে পারেন, তিনি আর হাজিরা দেবেন না। এর পরে আসামির অনুপস্থিতিতেই মামলার কাজ চালিয়ে যাওয়া হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ‘অবৈধ উৎস’ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা সংগ্রহ এবং সুরাইয়া খানম নামে এক জনের কাছ থেকে ট্রাস্টের নামে ৪২ কাঠা জমি কেনায় অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছিল এই মামলায়। দু’টি অভিযোগেই আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন