জ্যাকুলিন মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত।
জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটির আপডেটই ফেসবুকে দিতেন জ্যাকুলিন মিথিলা। তাই ‘আত্মহত্যা করব’-র মতো ভয়ানক এক স্যাটাসে সকলে চমকে গেলেও কেউ বিশ্বাস করতে পারেননি। অথচ, দিন চারেক পরে মিথিলার দেহ উদ্ধারের পর জানা গেল, জীবনের অন্যান্য ঘটনা জানানোর মতো আত্মহননের খবরটাও তিনি তাঁর ফলোয়ারদের দিতে চেয়েছিলেন।
গত ৩০ জানুয়ারি মাঝরাতে হঠাত্ই মিথিলা ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘কাল আমি আত্মহত্যা করব। কেউ আমাকে প্রত্যাখান করেনি। আমিও কাউকে প্রত্যাখান করিনি। কিন্তু, আমি আত্মহত্যা করব।’’ পরের দিন সকালে ফের তিনি লেখেন, ‘‘ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে পা বাড়াচ্ছি।’’ এর ঠিক দু’দিন পরে চট্টগ্রামের বাড়ি থেকে মিথিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর দেহের পাশ থেকে একটি চিরকূট উদ্ধার হয়েছে। সেখানে লেখা, ‘‘আমি ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের পর তাঁর ভালবাসা কমে গিয়েছে।’’ প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, পারিবারিক সমস্যার জেরেই আত্মহত্যা করেছেন ওই মডেল।
জ্যাকুলিনের ফেসবুক পোস্ট।
জ্যাকুলিন মিথিলা বাংলাদেশের উঠতি মডেল। তাঁর প্রকৃত নাম জয়া শীল। বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে নিজের খোলামেলা এবং সাহসী ছবি দিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন ওই তরুণী। এমনকী, খোলামেলা পোশাকে তিনি ফেসবুক লাইভও করেছেন। একের পর এক নতুন ছবি প্রকাশ করে তাক লাগিয়ে দিতেন হালের অন্যতম ‘হট মডেল’ জ্যাকুলিন। সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু, গত সপ্তাহের সোমবার তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে অনেকেরই ভিরমি খাওয়ার জোগাড় হয়। জনপ্রিয় ওই মডেল আত্মহত্যা করবেন বলে জানান। এর কয়েক দিন পরেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
ফেসবুকে এই স্যাটাস দিয়েছিলেন জ্যাকুলিন।
মিথিলার বাবা স্বপন শীল জানিয়েছেন, ১০-১২ দিন আগে জয়া ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। তখন তিনি বাবাকে জানান, ফটিকছড়ির ধুরম গ্রামের উৎপল রায় নামে এক তরুণের সঙ্গে তাঁর রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়েছে। ওই বিয়ে উৎপলের পরিবার মেনে নেয়নি বলেও জানিয়েচিলেন জয়া। স্বপনবাবুর কথায়, ‘‘এর পরে আমরা সমস্যা মেটাতে উত্পলদের বাড়িতে গেলে তাঁরা নানা ভাবে আমাদের অপমান করে। হুমকিও দেয়।’’ তাঁর দাবি, এই অপমান সহ্য করতে না পেরেই সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন জয়া। চট্টগ্রাম থানার ওসি ময়নুল ইসলাম জানিয়েছেন, মিথিলার দেহ উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলে উৎপলবাবু, তাঁর মা মীনাক্ষি মহাজন এবং ওই পরিবারের অন্য আট জনের নামে মামলা দায়ের করেছে মিথিলার পরিবার। মামলার নথিতে মিথিলার নাম জয়া শীল হিসেবেই লেখা হয়েছে।
আরও পড়ুন