ঢাকার কারওয়ান বাজারে বুধবার রাতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশে মেঘনা নদীর মোহনায় মিলছে না ইলিশের দেখা। নদীতে নেমে প্রায় শূন্য হাতে ফিরছেন জেলেরা। ফলেভরা বর্ষাতেও ইলিশের আড়তগুলো ফাঁকা। ইলিশ না পাওয়ায় চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুরের জেলেরাও পড়েছেন আর্থিক সঙ্কটে। জাটকা (খোকা ইলিশ) নিধন কর্মসূচির ব্যর্থতা, মেঘনায় ডুবো চর তৈরি হওয়া এবং নদীর নাব্যতা কমে যাওয়াকেই ইলিশ কমে যাওয়ার জন্য দায়ী করছেন লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্তারা।
প্রতি বছরই আষাঢ়ের বৃষ্টিতে বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশের ঝাঁক আসে লক্ষ্মীপুরের যে মোহনায়, সেখানে দিন রাত খেটে জাল পেতেও তেমন একটা ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। অথচ দু’বছর আগেও জৈষ্ঠ মাস থেকেই ইলিশের বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠত এখানের আড়তগুলো। গত বছরগুলোতে জেলার ২৬টা আড়তে প্রতি দিন প্রায় দু’ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের আমদানি হতো। এই বছর আড়তগুলো যেন ঝিমোচ্ছে। লক্ষ্মীপুর জেলার মজুচৌধুরীর হাট-সহ রামগতি উপজেলার গজারিয়া, বয়ারচর, তেলিরচর, আলেকজান্ডার ও রায়পুর উপজেলার জালিয়ার চর, পানিরঘাট ও কমলনগর চারকালকিনি-সহ উপকূলবর্তী বেশির ভাগ এলাকাতেই একই হাল।
আরও পড়ুন: লন্ডনে অ্যাসিড নিয়ে তাড়া সস্ত্রীক তামিমকে? অস্বীকার করলেন বাংলাদেশি তারকা
ইলিশের হাহাকার আছে চাঁদপুরেও। দুই নদী পদ্মা আর মেঘনার এই মোহনায় এবার জাটকা (খোকা ইলিশ) নিধন কার্যক্রম সফল হওয়ার কথা বলা হলেও ইলিশ ধরার পরিমান খুব একটা বাড়েনি। ছোট বড় ২৫টা মাছঘাট ঘুরে দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। সবচেয়ে বেশি মাঝঘাটে এই সময় প্রতি দিন আমদানি হচ্ছে তিনশ থেকে চারশ মন ইলিশ। তবে এই ঘাটে মূলত দেশের বিভিন্ন স্থান, বিশেষ করে বরিশাল থেকে, ইলিশ আসে। সেই ইলিশের মাঝে চাঁদপুরের ইলিশের পরিমাণ খুবই কম।
লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী- রায়পুর হাজিমারা থেকে রামগতির আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদীতে প্রতি দিন মাছ ধরে প্রায় ৪৭ হাজার জেলে। এদের মধ্যে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৭ হাজার ৮০০ জন। এই জেলেদের পরিবারে পরিবারে এখন চরম হতাশা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ এম মহিবুল্লাহ অবশ্য জানাচ্ছেন, মাছের পরিমাণ এখন কম থাকলেও অগষ্টে ভরা ইলিশ মরসুমে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আষাঢ়ে মেঘনায় ইলিশ না ধরা পড়ার জন্য জাটকা নিধন কর্মসূচির ব্যর্থতার কথা স্বীকার না করলেও তিনি বলেন, মেঘনায় ডুবো চর জেগে ওঠা আর নদী খনন না করার কারণে নদীতে ইলিশ কম আসতে পারে।