প্রণাম: বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন আওয়ামি লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গোপালগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনের সময়ে হিংসা ও অরাজকতা ছড়ানোর কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে আসায় চিন্তা বেড়েছে বাংলাদেশের পুলিশ ও প্রশাসনের। পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে নজরদারি বাড়িয়েছে তারা। চক্রান্তে যুক্ত কয়েক জনকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি কয়েকটি জায়গায় তল্লাশিও চালানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা রিয়াজ ও ফেরদৌস এ দিন ৮টি পথসভায় তাঁর সঙ্গী ছিলেন। বিএনপি-জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারাও সিলেটে হজরত শাহজালাল ও শাহ পরানের মাজারে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রচার শুরু করেন।
তবে ভোটের আগে হিংসা, খুনোখুনি ও অরাজকতা তৈরির চক্রান্তের বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এমন কয়েকটিতে যুক্ত। পুলিশ সূত্রের খবর, নির্বাচনী প্রচারকে রক্তাক্ত করা ছাড়াও জনপ্রিয় কিছু মানুষের ওপর জঙ্গি হামলার চক্রান্তের খবর পেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসনকে সব চেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে অরাজকতা তৈরির ষড়যন্ত্র। কারণ, এই শিল্পই বিদেশে বাংলাদেশের মুখ।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এই চক্রান্তের অনেকটাই এখন তাঁদের কাছে স্পষ্ট। আশুলিয়ায় সারি সারি গার্মেন্টস কারখানার লক্ষাধিক কর্মীর প্রায় সকলেই মহিলা। ৩০ তারিখে নির্বাচনের ৪-৫ দিন আগে তেমনই দু’এক জনকে ‘ধর্ষণ ও খুনের নাটক’ সাজিয়ে বাকি শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায় চক্রান্তকারীরা। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, বিএনপির কয়েক জন নেতা ও সরকার-বিরোধী এক বাম শ্রমিক নেতা এই চক্রান্তে যুক্ত। গার্মেন্টস শ্রমিকদের মধ্যে জামাতে ইসলামিরও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। শ্রমিকদের রাস্তায় নামানোর বিষয়ে তারাও তৎপর হয়েছে। কয়েক মাস আগে পরিবহণে শৃঙ্খলার দাবিতে স্কুল পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে বেশ কয়েক দিন জনজীবন স্তব্ধ করে দিয়েছিল। গোয়েন্দাদের দাবি, গার্মেন্টস শ্রমিকদের দিয়েও সেই কাজটি করিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ধূলিসাৎ করতে চাইছে চক্রান্তকারীরা।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কয়েক জন জঙ্গিকে গ্রেফতারের পরে নামী লেখক, শিল্পী বা অভিনেতাদের ওপর হামলার তথ্য মিলেছে। পুলিশের দাবি ঢাকার বনানীর একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি থেকে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের পরে তারা স্বীকার করেছে, জনপ্রিয় অভিনেতা খিজির হায়াৎকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের পাঠানো হয়েছিল। ‘মি. বাংলাদেশ’ নামে জঙ্গিবাদ-বিরোধী একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করায় খিজিরের নাম হিটলিস্টে তুলেছে জঙ্গি নেতারা। হামলার আগে তাঁর গতিবিধির ওপর নজর রাখছিল এই দুই জঙ্গি।