তিস্তা নিয়ে চাপ বাড়াতে ঢাকার অস্ত্র চিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দশ দিন আগে তিস্তা নিয়ে চাপ বাড়াতে চিনের তাস খেলল ঢাকা।

Advertisement

অগ্নি রায়

ঢাকা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের দশ দিন আগে তিস্তা নিয়ে চাপ বাড়াতে চিনের তাস খেলল ঢাকা।

Advertisement

আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসেই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এইচ টি ইমাম জানালেন— তিস্তায় জলের প্রবাহ যাতে ঠিক থাকে, তার জন্য বেজিংয়ের সঙ্গেও কথা বলাটা প্রয়োজন। তাঁর কথায়, “তিস্তা এবং ব্রহ্মপুত্রের উচ্চ অববাহিকায় জলের প্রবাহ নিয়ে আলোচনার জন্য আমরা চিনের সঙ্গে কথা বলতে পারি।’’ ইমামের কথায়, ভারত প্রায়ই অভিযোগ করে, চিন ব্রহ্মপুত্রে ইচ্ছেমতো ব্যারাজ তৈরি করায় নিম্ন অববাহিকায় জলের পরিমাণ কমেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টার কথায়— ‘‘এ নিয়ে জট ছাড়াতে তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে আলোচনায় চিনকেও সামিল করা যেতে পারে।” বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে রাজনৈতিক আলাপ আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন ইমাম। বিষয়টিকে তাঁর ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে উল্লেখ করলেও তিনি জানান, বাংলাদেশ নেতৃত্ব নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে।

বিষয়টি এক দিকে যেমন অভিনব, অন্য দিকে তেমনই তাৎপর্যপূর্ণ। সামরিক ক্ষেত্রে চিনের সঙ্গে ঢাকার ক্রমঘনিষ্ঠতা নিয়ে নয়াদিল্লির অস্বস্তি লুকোনো বিষয় নয়। বাংলাদেশে চিনের বিপুল লগ্নিও দিল্লির কপালে ভাঁজ ফেলেছে। প্রশ্ন উঠেছে— এমন একটি সময়ে তিস্তার মতো একান্ত দ্বিপাক্ষিক বিষয়ের আলোচনায় বেজিংকে
জড়ানোর প্রস্তাব কেন দেওয়া হল? এটা কি হাসিনার সফরের আগে ভারতকে চাপে ফেলার নয়া কৌশল? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আশাবাদী ঢাকা। উপদেষ্টাদের আশা, দিল্লিতে মমতা নিশ্চয়ই হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু তার মধ্যেও চিনকে টেনে তিস্তা নিয়ে চাপ রাখলেন তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: হাসিনা-মমতা কথা হবে, আশায় ঢাকা

পদ্মা সেতু থেকে সামরিক সহযোগিতা— সর্বত্র চিনের সাহায্যের কথা ঢাকার বিশাল বিশাল সরকারি বিল বোর্ডে শোভা পাচ্ছে। তবে বেজিং ও নয়াদিল্লির তুলনামূলক আলোচনায় (অন্তত ভারতীয় সাংবাদিকদের সামনে) বাংলাদেশের সরকারি কর্তারা ভারতকেই এগিয়ে রাখছেন। তাঁরা বুঝছেন এখনই তিস্তা চুক্তি সই করার মতো পরিস্থিতি হয়নি। তিস্তা ব্যারাজের মানোন্নয়নের বিষয়টি যে হাসিনার সফরে গুরুত্ব পাবে, তা স্পষ্ট করেছেন বাংলাদেশের নেতৃত্ব। গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের প্রাথমিক সমীক্ষার ফল নিয়ে কথা হবে বলেও জানান হাসিনার অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা মশিউর রহমান। তাঁর মতে, এই প্রকল্প হলে অঞ্চলের কৃষি ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি এতটাই বাড়বে যে প্রকল্পের খরচ (৩০০ কোটি ডলার) উঠে আসবে। এই প্রকল্পের অর্ধেক খরচ বাংলাদেশ দিতে প্রস্তুত বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানাবেন হাসিনা। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও জানান, “গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকার জলসম্পদের উন্নতির বিষয়টি আসন্ন বৈঠকে আলোচনার টেবিলে থাকবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন