এক বছরের যাত্রাপথ অতিক্রম করে এসবিআই ব্যাঙ্কের ডিজিটাল শাখা– ইয়োনো, বদলে দিয়েছে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সমস্ত পুরনো চিন্তাধারা। সদ্য বর্ষপূর্তির এই সাফল্য উদযাপন করতেই এসবিআই ইয়োনো- সম্মানিত করতে চলেছে ২০ বছরের অনূর্ধ্ব তরুণ প্রতিভাদের।
ইয়োনো এসবিআই 20 under 20 পুরস্কার সেই সমস্ত তরুণ প্রতিভাদের জন্য, যাদের বয়স ২০ বছর কিংবা তার কম, অথচ সাফল্যের মাপকাঠিতে টেক্কা দিতে পারেন যে কোনও বড় ব্যক্তিত্বকে। এদের সাফল্যের খতিয়ানই বলে দেয় দেশের আগামীর ভিত কতটা পোক্ত। এই সমস্ত প্রতিভাদের কুর্নিশ জানাতেই এসবিআই ইয়োনো-র এই উদ্যোগ।
সারা ভারতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই রকমই মোট ৬০ জন প্রতিভাকে এই পুরস্কারের জন্য বেছে নিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি। প্রতিটি বিভাগে রয়েছে তিন জনের নাম। এ বার দেখার, আপামর জনগণ এদের মধ্যে থেকে সেরার সেরা হিসেবে কাদের বেছে নেন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অনলাইন পাবলিক ভোটিং। পুরস্কারের এই বিভাগগুলি হল - প্রতিভাবান শিক্ষার্থী, অভিনেতা, খেলাধুলো, শিল্প ও সাহিত্য, প্রতিশ্রুতিবান গেম-চেঞ্জার, সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবক, পারফর্মিং আর্টিস্ট, প্রতিবন্ধী চ্যাম্পিয়ন, গ্লোবাল ইন্ডিয়ান, এবং স্থায়ী পথিকৃৎ।
জুড়ি অর্থাৎ বিশেষজ্ঞদের কমিটির মধ্যে রয়েছেন - ন্যাশনাল পেমেন্টস্ কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার প্রধান, দিলীপ আসবে, মাইক্রোসফট্ ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শশী শ্রীধরন, পাওলো অল্টোর ফেসবুকের প্রাক্তন ডিরেক্টর আনন্দ চন্দ্রশেখর, অভিনেত্রী ও লেখিকা সোহা আলি খান, জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক গুডউইল অ্যাম্বাসেডর দিয়া মির্জা, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার মল্লিকা দুয়া, ক্রীড়া সাংবাদিক এবং লেখক বড়িয়া মজুমদার।
এই মনোনীত প্রতিভাদের বেছে নিতে সাহায্য করেছে পুরস্কারের নলেজ পার্টনার কেপিএমজি। সেই সঙ্গে YONO SBI 20 under 20 পুরস্কারকে সহযোগিতা করছে ভারতের নেতৃস্থানীয় প্রভাবশালী প্রবৃত্তি এবং কনটেন্ট সংস্থা, 'দ্য নেটওয়ার্ক'।
এই ৬০ জন মনোনীত প্রতিভাদের বেছে নেওয়া হয়েছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। যাদের মধ্যে ১৫ জন দক্ষিণ ভারতের, ১৭ জন উত্তর ভারতের, ১৪ জন পশ্চিম ভারতের, ৫ জন মধ্য ভারতের এবং পূর্ব ভারতের থেকে রয়েছেন ৫ জন। গ্লোবাল ইন্ডিয়ান বিভাগে মোট ৬ জন মনোনীত হয়েছেন।
এই মনোনীত প্রতিভাদের মধ্যে সামনের সারিতেই রয়েছেন হিমা দাস। যার নতুন করে কোনও পরিচয় দেওয়ার বোধ হয় প্রয়োজন নেই। অসমের এই স্প্রিন্টার প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ফিনল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইএএএফ ওয়ার্ল্ড অনূর্ধ্ব-২০ বিভাগের ৪০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণপদক অর্জন করে নজির সৃষ্টি করেছেন। ৬ ভাইবোনদের মধ্যে হিমা দাস সর্বকনিষ্ঠ। ট্র্যাক প্র্যাকটিস তো দূরের কথা, তাঁর জুতো কেনারও সামর্থ্য ছিল না। কিন্তু ছিল স্বপ্ন দেখার অদম্য সাহস। কাদামাখা ফুটবল মাঠে যিনি রোজ দৌড়তেন। কোনওরকম সঠিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁর এই সাফল্যের আখ্যান এখন ঘরে ঘরে আলোচনার বিষয়।
ঠিক এইরকমই আরও এক তরুণ প্রতিভা হলেন পশ্চিমবঙ্গের তুহিন দে। সেরিব্রাল পলসি রোগে আক্রান্ত তুহিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারেন না। কিন্ত তাতে কী! এই প্রতিবন্ধকতা তুহিনের জীবনে কোনও বাধা হয়েই দাঁড়াতে পারেনি। তুহিন লেখেন মুখ দিয়ে। ল্যাপটপ এবং মোবাইল ব্যবহারের সময় ব্যবহার করেন নিজের ঠোঁট। আর তিনি এতটাই দ্রুত টাইপ করতে পারেন যে, তা যে কোনও সাধারণ লোককে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে। শুনলে অবাক হবেন, তুহিন নিজের চেষ্টায় C++, এবং অ্যাডভান্সড জাভা সহ অনেক কিছু শিখে ফেলেছেন।
অন্তরা নন্দী। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার বিভাগে মনোনীত অসমের এই ১৮ বছরের গায়িকার ২ লক্ষ অনুগামী রয়েছে ফেসবুকে। ৯০ হাজার অনুগামী রয়েছে ইনস্টাগ্রামে এবং ৭০ হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে ইউটিউবে।
এই তরুণ প্রতিভাদের প্রত্যেকের মধ্যেই রয়েছে এগিয়ে চলার অদম্য সাহস। প্রতিকূলতা ভাঙার খিদে। এঁরা প্রত্যেকেই নিজের লক্ষ্যে অবিচল। এই সমস্ত কিছুই মিলে যায় ইয়োনো, এসবিআই ডিজিটাল ব্যাঙ্কের ব্যবহারকারীদের মনোভাবে সঙ্গে। নতুন জেনারেশনে ইয়োনো ব্যাঙ্কের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ঠিক এই প্রতিভাদের মতোই। যা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়।