দেশের নানা প্রান্তের মতো রাজ্যেও মাস কয়েক ধরেই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে ১০ টাকার মুদ্রা নিয়ে। দোকান-বাজারে, বাসে, মেট্রোয় ওই কয়েন দিলে, তা অনেক সময়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (আর বি আই) নির্দেশে এই মুদ্রা নাকি অচল। ফলে এতে লেনদেন আর বৈধ নয়। যার জেরে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় জটিলতা কাটাতেই এ বার দ্রুত এগিয়ে এসেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। আমজনতাকে আশ্বাস দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, এটা স্রেফ গুজব। ১০ টাকার মুদ্রা সম্পূর্ণ বৈধ।
বহু যাত্রীরই অভিযোগ, বাসে ভাড়া মেটাতে কনডাক্টরকে ১০ টাকার কয়েন দিলে, তাঁরা নিতে চাইছেন না। মেট্রো রেলেও একই ছবি। অন্যতম ভুক্তভোগী বিএসএনএলের প্রাক্তন আধিকারিক অমিত গুপ্ত। তিনি জানান, কেনাকাটার পরে তিনি ওই কয়েন দিতে গেলে অচল হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে দোকানদারেরা তা নিতে অস্বীকার করেন। এমনকী অমিতবাবুকে পরে দাম মিটিয়ে দিতে বলেন তাঁরা। আবার মেট্রো রেলের অনেক যাত্রী টিকিট কাউন্টারে ভোগান্তিতে পড়েন। কর্মীদের কাছে মুদ্রা ‘বাতিল’ সংক্রান্ত আরবিআইয়ের নির্দেশ দেখতে চাইলে, তাঁরা তা দেখাতে পারেননি।
সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, ১০ টাকার কয়েন জাল হচ্ছে বলে খবর ছড়িয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ওই মুদ্রা বাজার থেকে তুলে নিচ্ছে। আর এর ফলেই তীব্র বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে মানুষের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতেই স্বীকৃত ওই মুদ্রা বাতিলের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে আরবিআই। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিও জানিয়েছে, ১০ টাকার মুদ্রা তুলে নেওয়ার কোনও নির্দেশ তারা পায়নি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুখপাত্র আলপনা কিলাওয়ালাও বলেন, ‘‘এমন নির্দেশ ব্যাঙ্ক দেয়নি। স্বীকৃত ১০ টাকার মুদ্রা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে সম্পূর্ণ বৈধ। তাই তা প্রত্যাহারের প্রশ্নই নেই।’’
আরবিআই সূত্রে খবর, ২০০৭ সালে প্রথম এই ১০ টাকার মুদ্রা বাজারে আসে। আর ২০১১ সালে এক দিকে অশোক স্তম্ভ ও উল্টো পিঠে টাকার নতুন প্রতীক চিহ্নযুক্ত ১০ টাকার কয়েন আনা হয়। আরবিআই জানিয়েছে, ওই দু’ধরনের মুদ্রাই লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈধ।