এত দিন পণ্য সরবরাহকারীর ব্যবসা বছরে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে, জিএসটিতে নথিভুক্তি বা ওই কর দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। সম্প্রতি ওই সীমা বাড়িয়ে ৪০ লক্ষ করেছে কেন্দ্র। লক্ষ্য, নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর ধাক্কায় ক্ষুব্ধ ছোট ব্যবসায়ীদের মন পাওয়া। এতে বহু ব্যবসায়ী করের ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি পাবেন বলে ব্যবস্থাটি মেনে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। রাজ্যের অর্থ দফতরের কর্তাদের দাবি, এর ফলে এ রাজ্যের প্রায় অর্ধেক ব্যবসায়ীকেই আর জিএসটি দিতে হবে না। তবে তাতে বছরে কর আদায় কমবে অন্তত ৩,০০০ কোটি টাকা।
নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘প্রায় তিন লাখ ব্যবসায়ীকে করের বোঝা বইতে হবে না। সেটাই বড় ব্যাপার।’’ কিন্তু রাজ্যের কর কর্তাদের একাংশের মতে, একলপ্তে এত জনের জিএসটির বাইরে বেরোনো কর কাঠামোয় বড়সড় ধাক্কা। তাঁদের কর দেওয়ার অভ্যাস নষ্ট হবে।
কর কর্তারা জানাচ্ছেন, ভ্যাট থাকার সময় রাজ্যে তিন লক্ষ ব্যবসায়ী নথিভুক্ত ছিলেন। নিয়মিত কর দিতেন আড়াই লক্ষ। জিএসটি চালুর পরে সাড়ে ৬ লক্ষ ব্যবসায়ী তাতে নাম লেখান। নিয়মিত কর দিতেন প্রায় ৮৫%। ওই কর্তাদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে বড় শিল্পের আকাল। ছোট-মাঝারি ব্যবসাই বেশি। অথচ নতুন ব্যবস্থায় তাঁদের অর্ধেকেই কর বৃত্তের বাইরে চলে যাবেন। যার অর্থ, ভ্যাট জমানায় যত ব্যবসায়ী বিক্রয় কর দিতেন, জিএসটিতেও সেই সংখ্যকের থেকেই নিয়মিত কর পাবে রাজ্য।
তবে কর দফতরের কর্তাদের আশা, ৪০ লাখি কারবারিদের অনেকে জিএসটি নেটওয়ার্ক ছেড়ে না-ও বেরোতে পারেন। কারণ, জিএসটি দিলে তবেই কাঁচামাল ইত্যাদির জন্য আগে মেটানো করের টাকা (ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট) দাবি করা যায়।
নবান্ন কর্তাদের বক্তব্য, কেন্দ্র বছরে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত কারবারে ছাড় দিলেও, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র চেয়েছিলেন ৫০ লাখ। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের ৬০ ভাগ ব্যবসায়ীকেই জিএসটির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে যে রাজস্ব ৫,০০০ কোটি কম হত! নবান্নের বক্তব্য, ব্যবসায়ীদের তো সুরাহা হত!