৩৪০ কোটির লগ্নি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে

বছর দেড়েক আগে আইটিসি-র হাত ধরে রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে ১,২০০ কোটি টাকা লগ্নি এসেছিল। হাওড়ার ধূলাগড়, উলুবেড়িয়া ও পাঁচলায় কারখানা তৈরি করে উৎপাদনও শুরু করে দিয়েছে ওই সংস্থা। এ বার ছোট-মাঝারি মিলিয়ে রাজ্যের ৩৪টি সংস্থা এই শিল্পে প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা লগ্নি করতে চলেছে।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৪
Share:

বছর দেড়েক আগে আইটিসি-র হাত ধরে রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে ১,২০০ কোটি টাকা লগ্নি এসেছিল। হাওড়ার ধূলাগড়, উলুবেড়িয়া ও পাঁচলায় কারখানা তৈরি করে উৎপাদনও শুরু করে দিয়েছে ওই সংস্থা। এ বার ছোট-মাঝারি মিলিয়ে রাজ্যের ৩৪টি সংস্থা এই শিল্পে প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা লগ্নি করতে চলেছে। এতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

Advertisement

খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের এক কর্তা জানান, প্রায় প্রতিটি সংস্থাই প্রকল্প তৈরি বা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে যেমন চালকল রয়েছে, তেমনই ফলের রস তৈরি, প্রক্রিয়াজাত মাংস রফতানির কারখানা, আইসক্রিম, বেকারি, তুষ তেল, মশলার মতো প্রকল্পও আছে। বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ-সহ বিভিন্ন জেলায় এই প্রকল্পগুলি গড়ে উঠছে।

ওই কর্তা জানান, সবচেয়ে বড় লগ্নি হতে চলেছে হাওড়ায়। একটি বেসরকারি সংস্থা প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ঢেলে আধুনিক বেকারি কারখানা তৈরি করছে। এ ছাড়া, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্ধমানে দু’টি বড় চালকল তৈরি হচ্ছে। বাকি প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ হচ্ছে ২ থেকে ২০ কোটি টাকা। প্রতিটি সংস্থাকেই নিয়ম মেনে আর্থিক ছাড় ও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁর দাবি।

Advertisement

প্রশাসনের বক্তব্য, সরকার গঠনের গোড়া থেকেই ছোট-মাঝারি শিল্পকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত তিন বছর ধরে বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনেও ছোট-মাঝারি শিল্পকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের যুক্তি, ছোট শিল্পে কর্মসংস্থান বেশি হয়। তাই গুরুত্বও বেশি দেওয়া হচ্ছে। দফতরের দাবি, রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে লগ্নির আহ্বান জানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, গত কয়েক বছরে কৃষিজাত শস্য ও সব ধরনের ফলের উৎপাদন বেড়েছে। জেলাস্তরে রাস্তাঘাট ভাল হওয়ায় পণ্য আদান-প্রদানে কম সময় লাগছে। আর এই সব কারণেই রফতানিযোগ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে ভাল লগ্নি আসছে।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ সাল পর্যন্ত রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা ছিল ২,১০০টির মতো। তা ২,৫০০ ছাড়াতে চলেছে। ২০১৩ সালের অগস্ট থেকে ২০১৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত নতুন ৫০টি সংস্থা লগ্নি করেছে। ২০১৬ পর্যন্ত মোট লগ্নি প্রায় ৪,১৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে আই টি সি-র মতো বড় সংস্থাও রয়েছে।

সম্প্রতি বণিকসভা সিআইআই ও আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি একটি সমীক্ষা-রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে লগ্নি ৩৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। ৫ বছরে অন্তত ২.২০ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘‘অংশীদারি চাষ শুরু করেছি। বহু জায়গায় বেসরকারি সংস্থা কৃষকদের সঙ্গে চুক্তি-চাষ করছে। ফলে কৃষিজাত পণ্য কিনে প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়তে অনেকে আসছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন