মোর্চার ডাকা এক দিনের বন্ধে শুক্রবার কাজ হল না দার্জিলিং ও কালিম্পঙের ৮৭টি চা-বাগানের কোনটিতেই। চা শিল্পমহল সূত্রে দাবি, এক দিন বাগান বন্ধ থাকায় প্রায় ৯০ হাজার কেজি চা কম তৈরি হবে। নিলামে এই সময়ের চায়ের দাম ওঠে কেজি পিছু কমপক্ষে ৫০০ টাকা। সে ক্ষেত্রে এই এক দিনেই বাগানগুলির মোট ক্ষতি হবে ৪.৫ কোটি টাকা। আর এই চা বিদেশে বিক্রি হলে নিলামে দাম ওঠে আরও বেশি। সে ক্ষেত্রে লোকসানের অঙ্কও বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সপ্তাহখানেক আগেই ‘সেকেন্ড ফ্লাশ’ চা পাতা উঠতে শুরু করেছে। শুধু দেশেই নয়, রফতানি বাজারেও যার চাহিদা বিপুল। দামও অনেকটা বেশি। এই পরিস্থিতিতে বেশি দিন বন্ধ থাকলে ক্ষতি হবে চা-বাগানগুলির। আশঙ্কা রয়েছে রফতানির বাজার হারানোরও। পাশাপাশি, ন্যূনতম মজুরি সংশোধনের দাবিতে ১২ ও ১৩ জুন, দু’দিনের চা-বাগান বনধ হলে ক্ষতি আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা তাদের।
দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্যায় এ দিন জানান, কয়েকটি বাগানে কিছু তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক-কর্মী কাজে এলেও, মোর্চার তরফে বাধা দেওয়া হয়। ফলে তাঁরা ফিরে যেতে বাধ্য হন। গোলমালের আশঙ্কায় বাগানে পুলিশি টহলদারি শুরু হয়। কাজ না-হওয়া ছাড়া অবশ্য বড় কোনও সমস্যা হয়নি। উল্লেখ্য, এই ৮৭টি বাগানে প্রায় ৬৬ হাজার কর্মী রয়েছেন।
নিষ্ফলা বৈঠক: চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চুক্তি নিয়ে বৈঠকেও জট কাটল না। দু’দিনের চা শিল্প ধর্মঘটে তাই অনড় থাকল শ্রমিক সংগঠনগুলি। শুক্রবার উত্তরকন্যায় মজুরি চুক্তি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ছিল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। মজুরি চুক্তি ছাড়াও, চা-বাগানে অন্তর্বর্তীকালীন ত্রাণ ও রেশন নিয়েও এ দিন বৈঠক হয়। পরের দু’টি বৈঠক অবশ্য বেশিরভাগ শ্রমিক সংগঠনই বয়কট করে। তবে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহার দাবি, আলোচনা এগোচ্ছে। তা শেষ হওয়ার আগে দু’দিনের ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য শ্রমিক ইউনিয়নগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।